মায়ের দেহ আগলে ৪ দিন!‌

মায়ের মৃত্যুর পর দেহ আগলে রেখে সংরক্ষণের চেষ্টা। ব্যর্থ হওয়ায় ফ্ল্যাটেই পোড়ানোর চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত দুর্গন্ধ বের হতে থাকায় পড়শিদের সহায়তায় মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হল। আদালতের নির্দেশে ছেলেকে পাঠানো হল পাভলভে।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধা রেবা গুপ্ত (৮২) তাঁর ছেলে সঞ্জীবশঙ্করের সঙ্গে চেতলায় শঙ্কর বসু রোডে একটি আবাসনের একতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন৷ কয়েক দিন ধরে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না৷ শুক্রবার বিকেলে ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় সকলে গিয়ে বৃদ্ধার ফ্ল্যাটের দরজা ধাক্কা দেন৷ ছেলে দরজা খুলে দিয়ে পাশের ঘরে বসে পড়েন৷ কীসের গন্ধ জানতে চাওয়ায় সঞ্জীবশঙ্কর জানায়, মা মারা গেছেন। সেখান থেকেই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পড়শিদের দাবি, তাঁরা যখন দেখেন তখন দেহ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি সঞ্জীবশঙ্করকে জেরা শুরু করে।

পুলিশের দাবি, কখনও তিনি বলেন, তাঁর মায়ের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে৷ কখনও দাবি করেন, নিজেই নাকি মাকে খুন করেছেন৷ পড়শিদের দাবি, তাঁদেরকে সঞ্জীবশঙ্কর বলেছে সাপের কামড়ে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তাই অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় দিন চারেক আগে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রেবা গুপ্তর।

এরপর জেরা করতে সঞ্জীবশঙ্কর জানাল, ইহুদি পদ্ধতিতে মায়ের দেহ সংরক্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। ব্যর্থ হওয়ায় পোড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। পুলিশ ফ্ল্যাট থেকে রাসায়নিক এবং এই সংক্রান্ত বই উদ্ধার করেছে। পাওয়া গেছে কেরোসিনও। চিকিৎসক দেখানোর পর জানা যায়, সঞ্জীবশঙ্কর মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে আদালতের নির্দেশে পাভলভে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ভবানীপুরের একটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন রেবা দেবী। সঞ্জীব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি শেষ করে চাকরি করতেন। দেশে ফিরে মোহালিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে গিয়েছিলেন। বিয়ে করেন। কোনও কারণে চাকরি চলে যায়। স্ত্রী বধূ নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। পরে বিবাহবিচ্ছেদও হয়ে যায়। এরপরই সম্ভবত তিনি অবসাদে ভুগতে শুরু করেন।‌‌‌

এসএইচ-১০/২০/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)