ঠিক কবে এই মাজেজা আপনার করায়ত্ত হয়ে পড়বে তা বলতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা তবে তারা জানেন এটি কিভাবে সম্ভব। একই কারণে বিশ^ব্যাপী মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে কিন্তু একই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি সুস্থ থাকার দিনগুলো। বয়স্ক মানুষ নানা অসুখ-বিসুখের শিকার হয়ে শেষ দিনগুলো অনেকটা যন্ত্রণার মধ্য দিয়েই কাটান।
এর কারণ শরীর যখন নিজেকে মেরামত করতে ব্যর্থ হয় তখন ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে থাকে। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং কোষকলায় জমতে থাকে আমিষসহ নানা আবর্জনা। এ সময়ে জিনের গঠন বদলে যায়। যাকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলা হয়। ক্রোমোসোম ঢিলে হয়ে যায়। কোনও কোনও কোষ ক্যান্সারধর্মী হয়ে ওঠে। আর অনেকেই হয়ে ওঠে ‘জম্বি’ বা জীয়ন্ত লাশ। দুর্বল হয়ে পড়ে দেহ-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও। শরীরে শক্তির যোগান দেয় মাইটোকোনড্রিয়া। এ সময়ে এটিও মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়ে। শরীরে এ সময়ে নিচু মাত্রার প্রদাহ বিরাজ করে। শরীরের এ অবস্থাকে বলা হয় ‘ইনফ্লামাজিং।’
কিন্তু শরীর মেরামতের প্রক্রিয়া কি করে ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তুলতে হয় বিজ্ঞানীরা তা এখন জানেন। যদি সবকিছু পরিকল্পনা মোতাবেক এগোয় তবে অদূর ভবিষ্যতেই এমন ওষুধ বাজারে চলে আসবে যা দিয়ে বার্ধক্য রোধ করা সম্ভব হবে। তবে ঠিক কতোদিনের মধ্যে এমন ওষুধ বাজারে আসবে সে বিষয়ে মোটেও ভবিষ্যতবাণী করতে রাজী নন বিজ্ঞানীরা। কারণ বিজনেস সিক্রেট বলেও কিছু ব্যাপার রয়েছে।
কিংবা প্রচলিত স্বাস্থ্য চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে যে বিশাল বাণিজ্য গড়ে উঠেছে তার একটা মোক্ষম বিকল্প হাতে না আসা পর্যন্ত নতুন প্রযুক্তি তারা বাজারে কেন ছাড়তে চাইবেন! তারপরও বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার কারণেই নতুন প্রযুক্তির হাত ধরে চলে আসবে এমন সব ওষুধ যা ব্যবহারে মানুষের আয়ু বাড়বে কিন্তু বার্ধক্য জনিত রোগ-ব্যাধির শিকার হবে না। অদূর ভবিষ্যতে এমনটি ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন একদল বিজ্ঞানী।
আয়ু বাড়ানোর পাশাপাশি সুস্থ অবস্থায় জীবন যাপনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তারা বলছেন, উন্নত বিশ্বে মানুষে গড় আয়ু বেড়ে ৮৫ বছর হয়েছে। অথচ এ আয়ুসীমার পুরোটাই সুস্থ হয়ে বাঁচে না মানুষ। বরং গড়ে শেষ ২০ বছর কাটে বার্ধক্যজনিত রোগভোগে। চিকিৎসাবিদরা একে ‘লেট লাইফ মরিবিডিটি’ বলে থাকেন। বয়সজনিত রোগ ভোগ যে কেবল ব্যক্তির জন্য কঠিন হয়ে ওঠে তা নয়। বরং এ রোগের ব্যয়ভার প্রভাব ফেলে সমাজের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতের ৮ শতাংশই ব্যয় হয় এ ভাবে। এ খাতে শেষ পর্যন্ত ব্যয় হয় হাজার হাজার কোটি ডলার। বৃদ্ধ জনগোষ্ঠী এ ভাবেই সমাজের জন্য বড় ধরণের ব্যয় ডেকে আনছেন যা ভাবিয়ে তুলেছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদদেরও।
জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিতে শরীরের নিজেকে মেরামত করার অক্ষমতাকেই বয়স হওয়া বোঝানো হয়। এখানেই আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা। জৈবিক প্রক্রিয়ায় বয়স বাড়ে তাই এ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে। এ কথা বলেছেন জোয়ান ম্যানিক। রেস্টোবিরো নামে একই ওষুধ কোম্পানির প্রধান মেডিক্যাল অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বয়স প্রতিহত করার ওষুধ তৈরির গবেষণায় যে সব কোম্পানি শীর্ষস্থানে রয়েছে তাদের অন্যতম হলো এটি।
এসএইচ-২১/২৯/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)