সময় মতো অফিস আসতে বলায় রেগে গিয়ে ম্যানেজারের মাথায় বন্দুক ঠেকালেন এক কর্মী। শুধু তাই নয়, ম্যানেজারের কলার চেপে ধরে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের বেনাচিতি শপিং মলে।
দেশটির একটি দৈনিক বলছে, বেনাচিতি শপিং মলের ইলেকট্রনিক্স স্টোরের ম্যানেজারের মাথায় রিভলভার ঠেকানোর এই অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক ও দোকানটির কর্মী দীপক গড়াইয়ের বিরুদ্ধে। শাসকদলের সমর্থক হওয়ায় দোকানের এই কর্মী সময় মতো কাজে আসতেন না। এমনকি কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছে মতো অফিস করতেন।
তার এমন আচরণে দীর্ঘদিন চুপ থাকলেও সম্প্রতি দোকানের ম্যানেজার তাকে নির্ধারিত সময়ে ইলেক্ট্রনিক্স স্টোরে আসা-যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তার এই নির্দেশ পাওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন গড়াই।
শনিবার ফের সময়মতো কাজে না আসার অভিযোগ ওঠে দীপকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে ওই ইলেকট্রনিক্স স্টোরের ম্যানেজার সৌভিক পাল প্রতিবাদ করেন। এরপরই দীপক তার দুই সঙ্গীকে নিয়ে স্টোরে এসে ম্যানেজার সৌভিকের কলার চেপে ধরে মাথায় বন্দুক ঠেকান। এমনকি তাকে খুনেরও হুমকি দেন।
গড়াইয়ের এমন কাণ্ডে ম্যানেজার সৌভিক-সহ ওই স্টোরের অন্য কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে খবর পেয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর থেকে পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
প্রাণ নাশের হুমকি ও ম্যানেজারকে মারধরের অভিযোগের রোববার অভিযুক্ত দীপক গড়াই ও তার এক সঙ্গীকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া যে রিভলভার ব্যবহার করে ম্যানেজারকে হুমকি দেয়া হয়েছিল, সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
স্টোরের ম্যানেজার সৌভিক পাল বলেন, আমরা সকলেই চাকরি সূত্রে বাইরে থেকে এসেছি। প্রতিষ্ঠান আমাকে তাদের কাজ দেখাশোনার জন্যই নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু কোনো স্থানীয় অধস্তন কর্মীকে যদি অনিয়মের জন্য সতর্ক করতে গিয়ে মাথায় রিভলভার ঠেকানো হয়, প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়, তাহলে এই স্টোর চালু রাখাই মুশকিল হয়ে যাবে।
তবে তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলার সাবেক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ওই কর্মী আমাদের দলের সমর্থক মাত্র। চাকরি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হচ্ছিল। তাই হয়তো খেলনা বন্দুক দেখিয়ে থাকবে। এই ঘটনাকে বড় করে দেখিয়ে দলকে বদনাম করার চক্রান্ত চলছে। তবুও এই খবর শুনে পুলিশকে বলেছি আইন আইনের পথে চলবে।
আসানসোল-দুর্গাপুরের ডিসি অভিষেক মোদি বলেন, ওই শপিংমল থেকে ফোন পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কর্মীদের কাছ থেকে ঘটনা শুনে তাদের সিসিটিভির ফুটেজ জমা করতে বলা হয়েছে।
এসএইচ-২৯/০৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)