বিয়ের চুক্তিপত্রে নতুন শর্ত জুড়ে দিল সৌদি নারীরা

সম্প্রতি সৌদি নারীরা বিয়ের চুক্তিপত্রে নতুন শর্ত সংযুক্ত করেছেন। সৌদি নারীদের পুরুষ অভিভাবকের ওপর নির্ভর করা বাধ্যতামূলক বিধায় এ দেশের নারীরা বিয়ের চুক্তিপত্রে নতুন কিছু শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন।

সৌদি আরবে গত বছর ২৪ জুন নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে সে দেশের সরকার, সোমবার \এর এক বছর পূর্তি হলো। এরপরও সৌদি নারীরা অনিশ্চয়তায় অনুভব করায় গাড়ি চালানোর ওপর স্বামীর নিশ্চয়তা পেতে এই ধরনের শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন।

এছাড়াও নারীরা বিয়ের চুক্তিতে আরো কিছু শর্তই জুড়ে দিচ্ছেন। কেউ শর্ত দিচ্ছেন বিয়ের পর তাকে চাকরি করতে দিতে হবে, কেউ শর্ত দিচ্ছেন বিয়ের পর স্বামীকে ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে, কেউ আবার শর্ত দিয়েছেন স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। স্ত্রীর উপার্জনে হাত দিতে পারবেন না, প্রথম বছরে বাচ্চা নিতে পারবেন না—এমন শর্তও ছুঁড়ে দিচ্ছেন দেশটির কোনো কোনো নারী। বিয়ের সময়ই চুক্তিপত্রে নারীদের এই ধরনের শর্ত যোগ করার বিষয়টি সৌদি আরবের পুরুষ শাষিত সমাজ পরিবর্তনের চিত্রই উপস্থাপন করছে।

সৌদি রক্ষণশীল সমাজে সর্বত্র পুরুষের আধিপত্যই বিরাজ করে। দেশটিতে নারীদের জীবন যাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়। পড়াশোনা, বিয়ে করা, এমনকি কারাভোগ শেষে কারাত্যাগের বিষয়েও পরিবারের পুরুষ অভিভাবকের সিদ্ধান্তের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়।

সাম্প্রতিক ইতিহাসে সৌদি আরবই একমাত্র দেশ, যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর আইন করে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। গত বছরের জুনে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারীদের জন্য এমন অনেক সংস্কারই হচ্ছে দেশটিতে।

কড়া পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সৌদি আরবে বিয়ের সময় করা চুক্তিপত্রই নারীদের নিরাপত্তাবলয় হিসেবে কাজ করে থাকে। স্বামীরা চুক্তির শর্ত ভাঙলে স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন গ্রাহ্য করেন আদালত।

উল্লেখ্য যে, নারীদের এই শর্তের পরিপ্রেক্ষিতে পুরুষেরাও এই চুক্তিতে স্ত্রীদের ওপর বেশ কিছু শর্ত চাপিয়ে দেন। যেমন স্ত্রী চাকরি করতে পারবেন না, বিয়ের পর শাশুড়ির (বরের মা) সঙ্গে থাকতে হবে ইত্যাদি।

বিয়ে নিবন্ধনকারী কাজিরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যৎ মতবিরোধ এড়াতেই হবু স্বামী-স্ত্রীরা চুক্তিপত্রে এসব শর্তের আশ্রয় নেন। তবে নারীদের শর্তে জুড়ে দেওয়া এখনো পুরোনো ধ্যানধারণার অনেকে মানতে পারেন না। অনেকে ‘ট্রোল’ করছেন ওই সব স্বামীদের।

দাম্মামের বাসিন্দা মাজেদ (২৯) চলতি মাসে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। তাঁর হবু স্ত্রী (২১) তাঁকে শর্ত দিয়েছেন, বিয়ের পর তাঁকে গাড়ি চালাতে এবং চাকরি করতে দিতে হবে। এই শর্ত মাজেদ মেনে নিয়েছেন।

এসএইচ-২১/২৭/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)