অদ্ভুত সব গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড (ভিডিও)

মানুষ বড়ই অদ্ভুত। অদ্ভুত তাদের শখ, তাদের চাওয়া পাওয়া। কখনো প্রকৃতির খেয়ালে অথবা কখনো মানুষের অদ্ভুত শখের কারণে ব্যতিক্রমী সব ঘটনার জন্ম হয়। অদ্ভুত সেই ঘটনাগুলোর ঠাঁই হয় গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে।

সবচেয়ে বড় চোখের পাপড়ি
নিজেকে সুন্দর দেখানোর চেষ্টা সবার মধ্যেই থাকে। মেয়েদের মধ্যে সেই চেষ্টাটা একটু বেশিই থাকে। সৌন্দর্যবর্ধনে অনেকেই নকল চোখের পাপড়ি ব্যবহার করে থাকে। এই বিশ্বরেকর্ডটি অবশ্য নকল পাপড়ি বিষয়ক নয়। এটি আসল চোখের পাপড়ির বিশ্বরেকর্ড। চীনের জিয়ানজিয়ার চোখে নকল পাপড়ি পড়ার কোনো দরকার নেই। কারণ তার চোখের পাপড়ি এতোটাই বড় যে তিনি এটি দিয়ে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন। তাঁর চোখের উপরের পাতার চোখের পাপড়ির দৈর্ঘ্য মাপা হয়েছে ১২.৪ সেন্টিমিটার। একবার তাকিয়েই দেখুন না কেমন দেখাচ্ছে জিয়ানজিয়াকে!

সবচেয়ে বৃদ্ধ বডিবিল্ডার
শরীরকে ভালো রাখতে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। সাধারনত তরুণ ও মধ্যবয়সীরাই স্বাস্থ্যসচেতন হিসেবে ব্যায়াম করে থাকে। তরুণদের অনেকে আবার বডি বিল্ডিং করেন। তবে ব্যায়ামের বিষয়টা খানিক মানিয়ে নিতে পারলেও বডি বিল্ডিং এর ব্যাপারটা বৃদ্ধদের সঙ্গে একদমই যায় না। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সেও যে বডি বিল্ডিং করা যায় সেটাই করে দেখিয়েছেন জিম অ্যারিংটন। বৃদ্ধ বয়সেই ব্যায়াম শুরু করেছেন তিনি। আর ব্যায়াম করতে করতে বডিও তৈরি করেছেন দারুনভাবে। আর ৮৫ বছর ৬ দিন বয়সে পেশাদার বডি বিল্ডার বনে রেকর্ড বুকে নিজের নাম লিখিয়েছেন জিম অ্যারিংটন। গিনেজ বুকে সবচেয়ে বৃদ্ধ বডি বিল্ডারের রেকর্ডটির পাশে এখন জ্বলজ্বল করছে তার নাম।

সবচেয়ে বড় নখের অধিকারিণী
অনেকেই নখ খানিকটা বড় রাখতে পছন্দ করেন। আবার অনেক নারীই নেইলপলিশে নিজেদের নখ রাঙাতে ভালোবাসেন। আজকালতো নখের উপর মাল্টিকালার নেইলপলিশও ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু আপনার নখ যদি ৬০ বছর বয়সী আয়ান্না উইলিয়ামসের মতো বড় হয় তাহলে ইচ্ছে থাকলেও সেটিকে নেইল পালিশে রাঙাতে পারবেন না। কারন এতো বড় নখ রাঙানোর জন্য যে খরচ পড়বে তা ভাবলেই চমকে ওঠবেন। কারণ উইলিয়ামসের নখের দৈর্ঘ্য মাপা হয়েছে ৫.৭৬ মিটার। আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন লি রেমন্ড। তাঁকে সরিয়ে রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন উইলিয়ামস। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে এখন সবচেয়ে বড় নখের অধিকারিনী আয়ান্না উইলিয়ামস।

সবচেয়ে বড় টপ ফেড চুল
চুল নিয়ে আমাদের ফ্যাশনের শেষ নেই। নানান রকম কাট আর নানান রকম ঢং। কেউ কেউ আবার বিচিত্র রঙেও রাঙিয়ে তোলেন চুল। অনেকে আবার চুলে জেল দিয়ে চুল খাড়া করে রাখতে পছন্দ করেন। কিন্তু সবার খাড়া চুলই হার মানবে বেন্নে হারলেমেসের চুলের কাছে। তাঁর খাড়া চুলের দৈর্ঘ্য মাপা হয়েছে ৫২ সেন্টিমিটার। আর বাইরে বের হতে গেলে তাঁর এই চুল ঠিক করতে সময় লাগে পাক্কা দুই ঘণ্টা। ফলে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে সবচেয়ে বড় টপ ফেড চুলের অধিকারী হিসেবে নিজের নাম লিখিয়েছেন বেন্নে হারলেমেস।

সবচেয়ে বড় পা
একজন মানুষের পা সর্বোচ্চ কতটা লম্বা হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরটা খুব বেশি কঠিন হওয়ার কথা নয়। কিন্তু একাতারিনা লিসিনাস সেই উত্তরটা কঠিন করে দেবেন। আপনি তাকে যে প্যান্টই কিনে দেন না কেন, সেটি তার ছোট হবে। কারণ গিনেস ওয়ার্ল্ডের রেকর্ড অনুসারে তিনিই পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় পায়ের অধিকারী। তাঁর পায়ের দৈর্ঘ্য মাপা হয়েছে ৫২ ইঞ্চি (১৩২ সেন্টিমিটার)। অর্থাৎ শুধু তাঁর পায়ের দৈর্ঘ্যই প্রায় চার ফিটের মতো। আদ্দিকালের মানুষ নাকি অনেক বেশি লম্বা ছিল। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে এ বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। সেসময়কার মানুষগুলো দেখতে কেমন ছিল তার কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে একাতারিনা লিসিনাসকে দেখলে।

বিশ্বের সেরা মারমাইটখেকো
খাবার খেয়ে অনেকেই রেকর্ড করেছেন। কিন্তু আন্দ্রে ওরটলফ এর রেকর্ডটি একটি ভিন্ন। তিনি রেকর্ড করেছেন মারমাইট খেয়ে। এই মারমাইট হলো ব্রিটিশদের খুব প্রিয় একটি খাবার। তরল জাতীয় এই পদার্থটি পাউরুটির সঙ্গে খেতে অনেকেই ভালোবাসেন। কিন্তু একসঙ্গে কতটুকু মারমাইট খেতে পারবেন আপনি? যা পারবেন তাঁর চেয়েও অনেকগুণ বেশি মারমাইট খেতে পারেন আন্দ্রে ওরটলফ। বর্তমানে এক মিনিটে সবচেয়ে বেশি মারমাইট খাওয়ার বিশ্বরেকর্ডটি তাঁর দখলে।

এক ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বেলুন ফুলানোর অধিকারী
রেকর্ডের জন্য মানুষ কতো কিছুই না করে। এমনই অদ্ভুত কাজ করেছেন হান্টার এওউইন। এক ঘন্টায় সবচেয়ে বেশি বেলুন ফুলানোর রেকর্ডটি তার। ধরুন আপনার বাসায় কোন পার্টি বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ঘর সাজানোর জন্য প্রচুর বেলুন ফুলানোর দরকার। তাহলে আপনি ভাড়া করতে পারেন হান্টার এওউইনকে। তিনি এক ঘণ্টায় প্রায় ৯১০টি বেলুন ফুলিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। তাই তিনি হতে পারেন এ কাজের জন্য সবচেয়ে যোগ্য লোক!

সবচেয়ে বড় লেজের বিড়াল
অনেকেই পোষা প্রাণী ভালোবাসেন। আর সেই প্রাণীটি যদি হয় বিশ্বরেকর্ডের শিকারী, তাহলেতো কথাই নেই। বলছি বিশ্বরেকর্ডধারী এক বিড়ালের কথা। শিকারি বিড়ালকে গোফ দিয়ে চেনা গেলেও এই রেকর্ডের অধিকারী কুকুরটিকে চিনতে হবে লেজ দিয়ে। কারন বিশ্বের সবচেয়ে বড় লেজের অধিকারী বিড়াল সাইগনুস। সিলভার মাইনে কুনের এই বিড়ালটির লেজের দৈর্ঘ্য মাপা হয়েছে ৪৪.৬৬ সেন্টিমিটার। দেখুনই না কেমন দেখাচ্ছে। চমকে ওঠার মতো নয় কি? কেমন হতো যদি আপনারও এমন একটি বিড়াল থাকতো!

সবচেয়ে দীর্ঘ গৃহপালিত বিড়াল
বন বিড়াল কিংবা বাইরে ঘুরে বেড়ানো বিড়ালের সাইজতো আর মাপা সম্ভব নয়। কিন্তু গৃহপালিত বিড়ালের সাইজ মাপা খুব কঠিন নয়। আকৃতিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিড়ালটির নাম অ্যালদেবারান পাওয়ারস। এই বিড়ালটির দৈর্ঘ্য মাপা হয় ৪৮.৪ সেন্টিমিটার। পৃথিবীর সব গৃহপালিত বিড়ালদের মধ্যে তাঁর দৈর্ঘ্যই সবচেয়ে বেশি। ২০১৬ সালে তাঁর গড়া এই রেকর্ডটি এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

সবচেয়ে বেশি টেডি বিয়ারের সংগ্রহ
পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় পুতুলের মধ্যে টেডি বিয়ার অন্যতম। আজকালকার বাচ্চারা খামোখাই টেডি বিয়ারের জন্য মন খারাপ করে। তবে কোনো পিচ্চি যদি বেশি মন খারাপ করে, তাহলে তাঁকে নিয়ে যেতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডেকোটার জ্যাকি মিলের কাছে। কারণ তাঁর কাছে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রায় আট হাজার ২৫টি টেডি বিয়ার। সর্বপ্রথম টেডি বিয়ার গ্র্যান্ডমা জ্যাকি দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর এই টেডি বিয়ার সংগ্রহ। এরপর সেটিকে ৮ হাজারের উপরে নিয়ে গিয়ে করেছেন গিনেজ রেকর্ড। ২০০০ সালে গড়া এই রেকর্ডটি এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

এসএইচ-১৪/১৯/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)