ফিরিয়ে দাও ৮ বছরের ভালোবাসা

দীর্ঘ আট বছরের প্রেম। ঘর বাধার স্বপ্ন ছিল দুজনের। তবে তাদের ইচ্ছাতে বাধ সাধে প্রেমিকের মাসিক ইনকাম। স্থানীয় একটি পেপার মিলে মাত্র পাঁচ হাজার টাকার বেতনের চাকরি করেন বলে প্রেমিকার ভাই ও বাবা তার সঙ্গে তাদের বোন ও মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি নন।

পরিবারের চাপে প্রেমিকের সঙ্গে প্রেমিকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি ভাই ও বাবার ভয়ে প্রেমিককে এড়িয়ে চলা শুরু করেন প্রেমিকা। এতেই বেঁকে বসেছেন প্রেমিক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উলুবেড়িয়া শহরের বাসিন্দা শিবনাথ রায়।

হারানো প্রেম ফিরিয়ে পেতে প্রেমিকার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। শনিবার বেলা এগারোটা থেকে প্রেমিকার বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন।

শনিবার প্রেমিকা সোমা ওরফে সোনালী দেঁড়ের বাড়ির সামনে ভালোবাসা ফেরত পাওয়ার দাবিতে অবস্থান নেন পাশের গ্রাম পিপুল্যানের বাসিন্দা শিবনাথ রায় নামের ২৪ বছরের এক যুবক। তার দাবি, গত আট বছর ধরে সোমার সঙ্গে তার প্রেম ছিল। কিন্তু তিনি স্থানীয় একটি পেপার মিলে পাঁচ হাজার টাকার বেতনের চাকরি করে বলে সোমার ভাই ও বাবা তার সঙ্গে সোমার বিয়ে দিতে রাজি নন।

পরিবারের লোকজনের ভয়ে সোমা তাকেও এড়িয়ে চলছে। শিবনাথ তার দাবির সপক্ষে বেশকিছু ছবি ও চিঠি দেখাযন। দুটি ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, তারা দক্ষিণেশ্বর ও উলুবেড়িয়ার কালীমন্দিরে গিয়ে সেই ছবিগুলি তুলেছে।

শিবনাথকে লেখা সোমার চারটি প্রেমপত্রও দেখাযন তিনি। এইসব ছবি ও চিঠি পোস্টার আকারে সোমার বাড়ির পাশে লাগিয়ে শিবনাথ অবস্থান নেন। তিনি লিখেছেন, ‘তোরা যে যা বলিস ভাই আমার ভালোবাসা ফেরত চাই’, ‘তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনালীকে চাই’। সোমার উদ্দেশে তার পোস্টার, ‘জীবন-যন্ত্রণা তুমি বুঝলে না, ফিরে এসো আমার কাছে এই আমার কামনা’।

শিবনাথ কয়েক দফায় ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে পুরো ঘটনাটা তুলে ধরেন। নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এই ঘটনা।

তবে সোমার মা বর্ণালী দেঁড়ের ভাষ্য, তার একমাত্র মেয়ে সোমা এখন বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তারা কিছুদিন আগে দুজনের বিয়ের বিষয়ে শিবনাথের বাড়ির লোকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে শিবনাথের বাবা বিয়ের যৌতুক হিসাবে মোটা টাকা দাবি করায় তাদের পক্ষে শিবনাথের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি।

তার দাবি, তার মেয়ে যখন নাবালিকা ছিল তখন ভুল করে ওই ছেলেকে ভালোবেসেছিল। এখন সে সাবালিকা হয়েছে, এখন সে সবকিছু বুঝতে শিখেছে। তাই এখন সে আর ওই ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি নয়।

শিবনাথের মামি রীতা রায় বলেন, শিবনাথ ও সোমা উভয়ে উভয়কে ছোট থেকে ভালোবাসে। এখন মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে সরিয়ে রাখছে তার পরিবার। তারা চান, শিবনাথের জীবনের হারানো আট বছরের ভালোবাসা মেয়েপক্ষ ফেরত দিক।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, মেয়েপক্ষ এই বিয়ের বিষয়ে এখনো কোনো সম্মতি দেয়নি। এই ঘটনায় মধ্যস্থতা চালিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাসী।

এসএইচ-০২/১৩/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)