কবর থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া শিশুটির বাঁচার লড়াই

গত বৃহস্পতিবার ভারতের উত্তর প্রদেশে কবর থেকে এক নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ওই কন্যাশিশুটি এখন হাসপাতালে বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে। উত্তর প্রদেশে বরেলি জেলায় একটি মাটির পাত্রে জীবিত কবর দেয়া হয়েছিল শিশুটিকে।

নিজের মৃত শিশুকে দাফন করতে কবর খুঁড়তে গিয়ে তিন ফুট মাটির ভেতর থেকে জীবিত শিশুটিকে উদ্ধার করেন উত্তরপ্রদেশের এক ব্যবসায়ী। কিছুদূর খোঁড়ার পরই মাটির পাত্রে কোদালের আঘাত লাগার পর মাটি সরিয়ে জীবিত ওই নবজাতকের খোঁজ পান তিনি।

কবর থেকে ওই কন্যাশিশুকে উদ্ধারের পর পুলিশকে খবর দিলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
বুধবার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা গুরুতর। তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পাঁচ থেকে সাতদিন পরেই নিশ্চিতভাবে এ বিষয়ে জানানো যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ঘটনায় পুলিশ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে এবং জানিয়েছে যে, তারা এই কন্যাশিশুটির বাবা-মাকে খুঁজছে।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা ধারণা করছেন কন্যা শিশু হওয়ায় তাকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে। আর এ কাজে শিশুটির বাবা-মায়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। শিশুটির বাবা-মায়ের খোঁজ করা হচ্ছে।

তীব্র লিঙ্গ বৈষম্যের দিক থেকে বিশ্বের প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। নারীদের প্রায়ই সামাজিকভাবে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সেখানে মেয়েদের বোঝা হিসাবে দেখা হয়, বিশেষ করে দরিদ্র সম্প্রদায়ে মেয়ে হলে তারা খুশি হতে পারেন না।

স্থানীয় সরকারি হাসপাতালের প্রধান শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সৌরভ অঞ্জন বারেইলি বলেন, আমার মনে হয় যখন শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয় তখন তার বয়স প্রায় এক সপ্তাহ ছিল। শিশুটি সময়ের আগেই জন্ম নিয়েছিল। সম্ভবত ৩০ সপ্তাহে জন্ম হয়েছে শিশুটির। তার ওজন মাত্র ১.১ কেজি। জন্মের সময় শিশুর আদর্শ ওজনের হিসেবে এটা খুবই কম।

ডাঃ অঞ্জন আরও বলেন, শিশুটির হাইপোথেরমিকও ছিল অর্থাৎ তার দেহের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের চেয়ে কম ছিল এবং হাইপোগ্লাইকেমিয়া ছিল। শিশুটির রক্তে শর্করার পরিমাণ ছিল ৩৫ যা কমপক্ষে ৪৫ হওয়া জরুরি।

তিনি আরও বলেন, শিশুটি খুব ছোট আর দুর্বল ছিল। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে অক্সিজেন দিয়েছিলাম এবং হাইপোথার্মিয়ার চিকিৎসাও শুরু করি। উন্নত সুবিধা থাকায় রোববার শিশুটিকে ডাঃ রবি খান্নার পেডিয়াট্রিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এসএইচ-১৩/১৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)