সিসিলিতে ফ্রি বাড়ি, মিলবে বোনাস, শর্ত শিশু সন্তান থাকতে হবে

সিসিলির ক্যামোরটা শহরে শতাধিক নয়নাভিরাম বাড়ি রয়েছে যেখানে বিনাপয়সায় শুধু যে বাস করার সুযোগ মিলছে তা নয়, রয়েছে মাসে ১ হাজার ইউরো নগদ প্রাপ্তির সুবিধা। বাড়িগুলো অবশ্য ভগ্নদশা ও পরিত্যক্ত। শহরটির বাসিন্দা হ্রাস পাওয়া এধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটনা পাহাড়ের ধারে ভূমধ্যসাগরের পাশের এ দ্বীপে গড়ে ওঠা এ শহরটিতে সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত দেখার মজাই আলাদা। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিক থেকেও সিসিলি কম যায় না।

তারপরও জনসংখ্যা প্রবলভাবে হ্রাস পাওয়ায় শহরটির মেয়র ভিনসেঞ্জো গিয়ামব্রোন এধরনের উচ্চাভিলাষী আবাসন পরিকল্পনা নিয়েছেন যাতে তার শহর ভুতুড়ে শহরে পরিণত না হয়। কারণ তিনি মনে করছেন শহরে মানুষ যত কমবে ততই শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব কমে যাবে। ইতিমধ্যে শহরটির অনেক বাড়ি ঘর খালি পড়ে আছে এবং তা বিনষ্ট হচ্ছে।

এসব বাড়ির মালিকরা বিদেশে চলে গিয়েছেন, কেউ মারা গিয়েছেন, কেউ অন্য দেশের বাসিন্দা হয়ে পড়েছেন। কিন্তু শর্ত একটাই এসব বাড়িতে ফ্রি বাস করতে হলে শিশু সন্তান থাকতে হবে। শিশুর মতই মায়া যেনো বাড়িটির প্রতি বিশেষ করে সেখানে বসত করার একটা টান সৃষ্টি হয় হয়ত এজন্যেই এ পন্থা বেছে নেয়া হয়েছে।

তবে বাড়ি বুঝে পেলে তিন বছরের মধ্যে তা সংস্কার ও ৫ হাজার ইউরো জমা রাখারও বাধ্যবাধকতা আছে। যখন বাড়ি সংস্কারের কাজ শেষ হবে তখন ৫ হাজার ইউরো ফেরত দেয়া হবে। তারপর এসব বাড়িতে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা রেস্টুরেন্টও দেয়া যাবে। সন্তান রয়েছে এমন তরুণ দম্পতিদের অগ্রাধিকার মিলবে।

এধরনের একটি বাড়ির দাম কম করে হলেও ১৩ লাখ পাউন্ড। কিন্তু বাড়ির ভিতরের ভগ্নদশা দেখলে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। মেয়র গিয়ামব্রোন সিএনএন ট্রাভেলকে বলেন, তিনি চান শহরটির প্রাণবৈচিত্র আর লোকালয়ের পরিবেশ ফের ফিরিয়ে আনতে। এই ঐতিহাসির শহরটি দুর্দশা আমার সহ্য হয় না।

এভাবে চলতে থাকলে বাড়িগুলো ধসে পড়তে শুরু করবে। এধরনের শত শত বাড়ি বাসিন্দার অপেক্ষায় যেন প্রহর গুনছে। তবে মেয়র গিয়ামব্রোন বলেন খুব শীঘ্রই তার এ প্রকল্পে শ’খানেক বাড়ি প্রাণ ফিরে পাবে।

ব্রিটিশ ব্যবসায়ী জোসে অগাস্টো মেনেটা রামোস এধরনের সুযোগকে বেশ লোভনীয় বলেই মনে করছেন। ভূমধ্যসাগরের তীর ঘেঁষে এমন উষ্ণ আবহাওয়ার সান্নিধ্যে বসবাস তার কাছে বেশ স্বাস্থ্যকর বলেই মনে হয়। ব্রাজিলিয়-ইতালিয় বংশদ্ভুত এই সেলস এক্সিকিউটিভ বলেন, ক্যামোরটা এক অসাধারণ সুন্দর শহর। সবুজ ঘাস, পাহাড় ও সমুদ্রে ঘেরা নিসর্গের হাতছানি সবসময় চোখে লেগে থাকে।

এসএইচ-১৭/০৩/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)