এসপির মন্তব্য ধর্ষণের বদলে ধর্ষণ!

মৃত্যুর বদলায় মৃত্যু হলে, ধর্ষণের উপযুক্ত জবাব ধর্ষণই। লাইভ অনুষ্ঠানে এমন অসংবেদনশীল মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়লেন সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল এসপি সিনহা। তবে তাতেও কুছ পরোয়া নহি। নিজের বক্তব্যে তিনি এতটাই অনড় যে বারবার অনুষ্ঠানে তারই পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন। সঞ্চালক তাঁর সাধ্যমতো এমন বিতর্কিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। কাজ হয়নি কিছুই। এসপি সিনহার এই মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব সেনাবাহিনীর একাংশও।

নব্বই দশকে কাশ্মীর উপত্যকার জনবিন্যাস পালটাতে থাকে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর নির্মম অত্যাচার নেমে আসে। তাঁদের রীতিমতো চিহ্নিত করে নৃশংস আচরণ করা হয়। যার ফলে লাখ খানেক কাশ্মীরি পণ্ডিত উপত্যকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তাঁরা জম্মু কিংবা তার আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য বসতি স্থাপন করেন। ভূস্বর্গের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ ছিন্ন হয় তাঁদের। কিন্তু গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা উঠে যাওয়ায় কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ফের উপত্যকায় ফেরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

আর এই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখেই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে লাইভ বিতর্ক অনুষ্ঠান চলছিল। অতিথি হিসেবে আরও কয়েকজনের সঙ্গে ছিলেন দেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল এসপি সিনহা। মতপ্রকাশ করতে গিয়ে এসপি সিনহা বলে ওঠেন, খুনের বদলা খুন, ধর্ষণের বদলা ধর্ষণ। এইভাবেই উপত্যকা থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিতাড়নের প্রতিশোধ তুলতে হবে।

একথা শোনামাত্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তাঁকে সংযত মন্তব্য করার অনুরোধ জানান। খেপে ওঠেন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য অতিথিরা। কিন্তু নিজের বক্তব্যে অনড় থাকেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান।

তার এই মন্তব্য ঘিরে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। সেনার একাংশও তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে। এক সেনা আধিকারিকের কথায়, যদিও উনি অবসরপ্রাপ্ত, তাই সেনাবাহিনীর কোনও নিয়ম মেনে চলার দরকার নেই। কিন্তু তাঁর এই মন্তব্য গোটা সেনাবাহিনীর ইমেজই খারাপ করল।

মেজর জেনারেলের বক্তব্যকে ভারতীয় সংবিধান, সংস্কৃতি মোটেই সমর্থন করে না। ধর্ষণ ও ধর্ষণের মতো বহু চরম অপরাধ সংঘটিত হয়। আজও হয়ে চলেছে। কিন্তু পালটা ধর্ষণের পথে প্রতিশোধ নেওয়াই কি সঙ্গত মনে করছেন ওই সেনা আধিকারিক? এই প্রশ্ন থাকছেই।

এসএইচ-১৭/১৯/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)