বনকর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো চিতাবাঘ (ভিডিও)

লোকালয়ে ঢুকে পড়া চিতাবাঘ ধরতে দিয়ে প্রাণে রক্ষা পেলো বনকর্মীরা। গাড়ির খোলা জানালা লক্ষ্য করে ঝাঁফিয়ে পড়েছিল বাঘটি। চিতাবাঘের মুখে আর একটু হলে প্রাণ যেতে তাদের।

জলপাইগুড়ির রংমাধালিতে রোববার এ ঘটনা ঘটে। তবে বড় কোনও বিপদ ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত ধরেও ফেলা হয় চিতাবাঘটিকে। রোমহর্ষক এই দৃশ্য ধরা পড়েছে বনকর্মীদেরই মোবাইল ক্যামেরায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে রংমাধালিতে আলুর জমিতে কাজ করছিলেন স্থানীয় কয়েক জন কৃষক। এলাকার তেমন কোনও জঙ্গল নেই। কিন্তু তার মধ্যেই আচমকা একটি চিতাবাঘ তাঁদের উপর আক্রমণ চালায়। চিতাবাঘের নখ ও দাঁতের আঘাতে আহত হন চার জন। তাঁরা কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচেন।

আহতরা হলেন- ইন্দ্রজিৎ দাস, নীলমণি দাস, সুদেব মৃধা ও রামকৃষ্ণ দাসকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

যে জমিতে কৃষকদের উপর হামলা চালিয়েছিল চিতাবাঘটি, সেখানে একটি গর্তের মতো রয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, হামলার আগে ওখানেই কোনও ভাবে এসে লুকিয়ে ছিল বাঘটি।

বন দফতরে খবর আসলে জাল ও বাঘ ধরার অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বৈকুণ্ঠপুর বেলাকোবা রেঞ্জের বনকর্মীরা। তখন ওই চত্বরেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল চিতাবাঘটি। একটি গাড়ি ও জাল নিয়ে তাঁরা চিতাবাঘটির কাছাকাছি চলে যান। দড়িতে ফাঁস দিয়ে, সেই ফাঁদ পেতে গাড়িতে অপেক্ষা করতে থাকেন বনকর্মীরা। কিছুক্ষণ পরে ফাঁদে পা দিতেই হ্যাঁচকা টানে বাঘটির পা দড়িতে বাঁধা পড়ে। এ বার দড়ি টেনে গাড়ির কাছে এনে জাল ফেলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বনকর্মীরা।

ঠিক সেই সময়েই আচমকা বিপত্তি। চিতাবাঘটি পায়ে দড়ি বাঁধা অবস্থাতেই গাড়ির কাছে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে জানালায়। ভিতরে তখন দু’-তিন জন বনকর্মী। জানালার কাচ নামানো ছিল। তবে বাঘটি হামলে পড়তেই কোনওক্রমে কাচের জানালা তুলে দেন বনকর্মীরা। ওই অবস্থাতেই কিছুক্ষণ জানালায় ঝুলে থাকার পরে নীচে নামে চিতা।

পরে জাল ফেলে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে শেষমেস বাঘটিকে ধরে ফেলেন বনকর্মীরা। তার পর খাঁচাবন্দি করে সেটিকে নিয়ে যাওয়া হয় বেলাকোবা বন দফতরে।

বৈকুণ্ঠপুরের ডিএফও উমারানি এন বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিতাবাঘটিকে স্থানীয় জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এসএইচ-১৪/০৩/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)