সিগারেটের দাম প্রতি প্যাকেট ৩০০০ টাকা

ধূমপানে অনুৎসাহিত করতে সিগারেটের দাম আরও বাড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। চলতি বছরেই এর দাম বাড়বে অন্তত ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। ফলে গড়ে প্রতি প্যাকেট সিগারেটের জন্য অজিদের ব্যয় করতে হবে অন্তত ৫০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার।
অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৯০৮ টাকা, যা সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই কার্যকর হবে নতুন মূল্যহার। সেসময় এক প্যাকেট মার্লবোরো গোল্ড সিগারেটের দাম হতে পারে অন্তত ৪৮ দশমিক ৫০ ডলার। সবচেয়ে কম দামি সিগারেটেও প্রতি প্যাকেটে খরচ পড়বে অন্তত ২৯ ডলার। তামাক ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে টানা আট বছর ধরে সিগারেটের দাম বাড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

যারা ভাবছেন, সিগারেট বাদ দিয়ে খোলা তামাক কিনে নিজেই বানিয়ে নেবেন, তাদের জন্যও দুঃসংবাদ! কারণ এক প্যাকেট খোলা তামাকের দাম আর সিগারেটের দাম থাকবে প্রায় কাছাকাছিই।

সেই হিসাবে, যাদের দিনে অন্তত এক প্যাকেট সিগারেট লাগে, তারা এই বদঅভ্যাসের কারণে এক বছরে ১০ হাজার ডলার গচ্চা দেবেন।

বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ধূমপায়ীদের ধূমপানে অনুৎসাহিত করতে এবং শিশুদের এই বাজে অভ্যাস গড়ে ওঠা থেকে বিরত রাখতে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হচ্ছে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি।

তবে নিউ সাউথ ওয়েলসের স্কুল অব পাবলিক হেলথের ড. কলিন মেনডেলসন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি ধূমপানের হার কমানোয় আর ততটা প্রভাব ফেলছে না।

অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর সিগারেটের দাম বাড়লেও ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্কদের ধূমপানের হার কমেছে মাত্র ০.৭ শতাংশ। তবে ১৯৯৫ সালে ধূমপানের হার ছিল ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০১৭-১৮ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

ড. মেনডেলসন বলেন, আমরা সাধারণত জানি, ট্যাক্স বাড়ালে ধূমপান কমে। কিন্তু একবারের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে আসক্তরা বলবে, ‘আমার আর কোনো উপায় নেই, যেভাবেই হোক ধূমপান করতে হবে।’ এ থেকে আপনি আর সুফল পাবেন না। বড়জোর যেটা করবেন তা হচ্ছে, আসক্ত ধূমপায়ীদের শাস্তি দেয়া ও কালোবাজারিতে উদ্বুব্ধ করা।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম ডব্লিউএ টুডে জানায়, গতবছর কালোবাজারে তামাক বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। সেসময় ৩০০ টনেরও বেশি চোরাই পণ্য উদ্ধার করেছিল কর্তৃপক্ষ।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কমান্ডার রড ও’ডনেল জানান, মূল্যবৃদ্ধির ফলে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হবে। তবে সহজলভ্য সিগারেট ধূমপানে আসক্তিতে সহায়তা করছে মন্তব্য করে এর চড়া দামকেই সমর্থন করেন তিনি।

২০১৬ সালে কোষাধ্যক্ষ থাকাকালে নিয়মিত শুল্কবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট হস্তান্তর করে তিনি জানিয়েছিলেন, এই শুল্কবৃদ্ধি আগামী চার বছরে সরকারের কোষাগারে ৪৭০ কোটি ডলার জমা করবে।

এসএইচ-১৯/২১/২০ (অনলাইন ডেস্ক)