গ্রামের নাম ‘করোনা’

সর্বত্রই নিস্তব্ধ-নিথর-পাথর সময় শোকস্তব্ধ মানুষের।অজানা, অচেনা, অদৃশ্য এক কণিকা যার দৃষ্টি নেই, শব্দ নেই, বোধ নেই, বিবেক নেই, নেই ঘ‌্রাণ, হাত পা কোনো কিছু। আছে শুধু সৃষ্টি আর বিস্তার।সেই ‘করোনা’- এই এক শব্দেই এখন কাঁপছে বিশ্ব। এবার ভারতেই পাওয়া গেল একটি গ্রাম, যার নাম ‘করোনা’।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, দেশটির উত্তর প্রদেশের লখনউ থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে এ গ্রামের অবস্থান। নিরিবিলি শান্ত পরিবেশের এই গ্রামটিই চলমান করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটা অশান্ত হয়ে উঠেছে। গ্রামের নাম ‘করোনা’ হওয়ায় বাইরের লোকদের কাছে হঠাৎই বিদ্রূপের বিষয় হয়ে উঠেছেন এখানকার বাসিন্দারা।

শুধু বিদ্রূপই নয়, এ গ্রামের ধারে-কাছেও ঘেঁষছে না আশপাশের মানুষরা। এমনকি গ্রাম ছেড়ে কাজের সন্ধানে অন্য গ্রামে গেলেও তাদের সঙ্গে মিশছেন না কেউ। এতে বিপাকে পড়েছেন ‘করোনা’ গ্রামের অধিবাসীরা।

রাজন নামে এক বাসিন্দা এএনআইকে বলেন, আমাদের কেউ কোনো কাজে নিচ্ছেন না। অন্য এলাকার বাসিন্দারা যখন পরিচয় জিজ্ঞেস করে তখন আমাদের গ্রামের নাম ‘করোনা’ বললে তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন। তারা কেউ বুঝতে চাচ্ছেন না যে এটা গ্রামের নাম, মরণব্যাধী করোনাভাইরাস নয়।

তিনি আরও বলেন, এই নামের কারণে সরকারি অনুদানও পাচ্ছি না আমরা। আমরা ‘করোনা’ থেকে আসছি বললেই সবাই পালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ভাবছেন, আমরা মহামারী ছড়াচ্ছি।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ফোনে গ্রামের নাম ‘করোনা’ বললে ওপাশ থেকে জবাব আসে- তাহলে বেঁচে আছেন কী করে!

ভারতের সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ জানিয়েছে, হিন্দু তীর্থযাত্রীদের কাছে বেশ পরিচিত এই করোনা গ্রাম। যে কারণে গ্রামটির বাসিন্দারা অনেক সম্মানীয় ছিলেন। কিন্তু নভেল করোনা আসার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে তা বিদ্রূপে রূপ নিয়েছে।

অথচ এই গ্রামের কোনো বাসিন্দা এখনও করোনা আক্রান্ত হননি। তাই এই সংকটে গ্রামবাসীর অনেকেই গ্রামের এই ঐতিহাসিক নাম বদলে ফেলতে চাইছেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১০২৪ জনে এবং এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭ জন। আর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৪৩ হাজার ২৮৬ জনের মধ্যে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং ৩৫ হাজার ৩৫০ জন রোগী মারা গেছেন।

এসএইচ-২১/৩১/২০ (অনলাইন ডেস্ক)