ফ্যাশনেবল জুতা তৈরির জন্য বিখ্যাত ইউরোপের দেশ পর্তুগালে করোনায় বিপাকে পড়েছেন উদ্যোক্তারা। মহামারির প্রথম তিন মাসে প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবসা হারানোর পর করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় আবারও বড় ধরনের লোকসানের শঙ্কায় আছেন তারা। তবে টিকে থাকতে ফেস মাস্ক ও প্লাস্টিকের জুতা উৎপাদন শুরুর মতো ব্যবসায়িক কৌশলও নিচ্ছেন অনেকে।
হলিউডের তারকাদের পায়ের সৌন্দর্য বাড়ায় পর্তুগিজ ব্রান্ডের জুতা। বিলাসবহুল পাদুকার ডিজাইনার লুইস অনফ্রে’র জুতা জনপ্রিয় নাওমি ওয়াটস থেকে শুরু করে প্যারিস হিলটনের পায়ে পর্যন্ত শোভা পায়। কিন্তু করোনা মহামারি আঘাত হানার পর এই ডিজাইনারের অর্ডার বাতিল হয়েছে একের পর এক।
পর্তুগালের লাক্সারি সু ডিজাইনার লুইস অনফ্রে বলেন, ফ্যাশন খাতের জন্য এটা চরম সংকট তৈরি করবে। কেননা গ্রীষ্মে দোকানিরা তেমন একটা বেচাকেনা করতে পারেননি। তাদের অনেক পণ্য মজুত আছে, তাই এমন অবস্থা যদি চলতে থাকে অনেকের ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না
মহামারিতে বন্ধ বিয়েশাদি, ককটেল পার্টি, যে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান। এমনকি অফিসও করতে হচ্ছে বাসা থেকে। এতেই কমে গেছে জুতার চাহিদা। ধাক্কা এসে পড়েছে ইউরোপের তৃতীয় বৃহৎ জুতা উৎপাদনকারী দেশ পর্তুগালে। এখানে তৈরি জুতার ৯০ শতাংশই রফতানি হয়।
অ্যাম্বিসাস ব্র্যান্ড সু’র ম্যানেজার পাউলো মার্টিন বলেন, আমরা আসলে বুঝতে পারিনি এতটা ভুগতে হবে। এখন যে পরিমাণ ক্রেতাদের চাহিদা আসছে, তা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে নতুন ব্যবসায়িক কৌশলের পথেও হাঁটছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বাজারে রিসাইক্লিং করা রাবারের সোল, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্লাস্টিক জুতা, মাস্কের বিক্রি বেড়েছে।
পর্তুগিজ সুমেকারস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক জাও মাইয়া বলেন, ফ্যাশনেবলসহ কিছু জুতার চাহিদা কমেছে, যেহেতু নাইট ক্লাব বা বাইরে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ নেই। সামাজিক অনুষ্ঠান না থাকায় বাসায় পরার আরামদায়ক জুতাই খুঁজছে বেশির ভাগ মানুষ।
টুওয়ার্কফরের হেড অব মার্কেটিং অরল্যান্ডো অ্যান্ড্রেইড বলেন, করোনার প্রথম ধাক্কায় বিক্রি তেমন একটা কমেনি, তবে কাঁচামাল পেতে সমস্যায় পড়েছিলাম। এ সময় জুতার পাশাপাশি মাস্ক উৎপাদন শুরু করি, যা প্রতিষ্ঠানের আয়ের চাকা আরও সচল করেছে।
করোনার কারণে পর্তুগালের অনেক কারখানায় শ্রমিক উপস্থিতি কমেছে। এতে মাঝেমধ্যেই কারখানার একাংশ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
এসএইচ-১৬/১৩/২০ (অনলাইন ডেস্ক)