বন্ধ ছিল হৃদযন্ত্র, ৪৫ মিনিট পর নড়ে উঠলেন অভিযাত্রী

দুর্গম এলাকায় নিখোঁজ হয়েছিলেন এক অভিযাত্রী। ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে আকাশপথে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় গুরুতর অসুস্থ ওই ব্যক্তির চিকিৎসা শুরু হয় জরুরি ভিত্তিতে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে স্তব্ধ হয়ে যায় তার হৃদযন্ত্র। কিন্তু হাল ছাড়েননি চিকিৎসকরা। শেষ পর্যন্ত তাদের চেষ্টাতেই প্রায় ৪৫ মিনিট পর প্রাণ ফিরে আসে মাইকেল ন্যাপিনস্কি নামে ওই অভিযাত্রীর দেহে। ফের তার হৃদযন্ত্র চালু করতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা। আপাতত অনেকটাই শঙ্কামুক্ত তিনি।

নিজের এক বন্ধুর সঙ্গে ওয়াশিংটনের মাউন্টে রেনিয়ার ন্যাশনাল পার্কে অভিযানে গেছিলেন মাইকেল। বরফে ঢাকা গিরিপথ পেরিয়ে বেশকিছুটা পথ পাড়ি দেওয়াই লক্ষ্য ছিল তার। আর মাইকেলের বন্ধু স্কি করে নিচের দিকে নেমে এসেছিলেন।

কিন্তু বেশ কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরই প্রবল তুষারঝড়ের মধ্যে পড়ে যান মাইকেল। ফেরার চেষ্টা করলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কার্যত বরফের নিচে চাপা পড়ে থাকেন তিনি। বন্ধুর থেকে খবর পেয়ে পরের দিন আবহাওয়ার উন্নতি হলে মাইকেলের খোঁজ শুরু হয়। হেলিকপ্টার করে আকাশপথে শুরু হয় তল্লাশি। শেষ পর্যন্ত তার খোঁজ মেলে।

এয়ারলিফ্ট করে মাইকেলকে গত রোববার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। দীর্ঘক্ষণ ঠাণ্ডার মধ্যে পড়ে থেকে ওই অভিযাত্রীর বেশকিছু অঙ্গ তখন ঠিকমতো কাজ করছিল না। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কিছুক্ষণের মধ্যেই তার হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়।

শেষ চেষ্টা হিসেবে সমানে সিপিআর প্রয়োগ করে এবং একমো যন্ত্রের সাহায্যে মাইকেলের হৃদযন্ত্র চালুর চেষ্টা করা হয। এই যন্ত্রের সাহায্যে কৃত্রিম পদ্ধতিতে রক্ত থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে ফেলে বিশুদ্ধ রক্ত শরীরে ফেরত পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে মাইকেলের হৃদযন্ত্র বন্ধ ছিল। শেষ পর্যন্ত তা চালু করা সম্ভব হয়। এরপর মাইকেলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়া পর্যন্ত সারা রাত তার পাশেই ছিলেন চিকিৎসক এবং নার্সরা।

প্রায় দুদিন পর সংজ্ঞা ফেরে মাইকেলের। জ্ঞান ফেরার পরই নিজের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। মাইকেলের জ্ঞান ফেরায় দারুণ খুশি হন তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার এবং নার্সরাও। তারা বলছেন, এটাই তো আমাদের কর্তব্য। যার জন্য এত চেষ্টা করলাম তার প্রাণ বাঁচাতে পারলেই তো সবথেকে বেশি তৃপ্তির।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এখনও মাইকেলের কিডনি এবং হৃদযন্ত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু সেসব ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর মাইকেল বলছেন, চিকিৎসকরা কিছুতেই আশা ছাড়েননি। সেই কারণেই আমি বেঁচে আছি। অসংখ্য মানুষকে আমার ধন্যবাদ জানাতে হবে।

এসএইচ-০৯/১৬/২০ (অনলাইন ডেস্ক)