নারীরা মন্ত্রী হতে পারেন না, সন্তান জন্ম দেবেন

তালেবানের এক মুখপাত্র বলেছেন, নারীরা মন্ত্রী হতে পারেন না, তাদের উচিত সন্তান জন্ম দেওয়া। নতুন আফগান সরকারে কোনো নারী মন্ত্রী না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে টোলো নিউজকে তালেবান মুখপাত্র সৈয়দ জেকরুল্লাহ হাশিমি এমন কথা বলেন।

তিনি বলেন, একজন নারী মন্ত্রী হতে পারেন না। তাকে এমন দায়িত্ব দেওয়ার অর্থ হচ্ছে—তারা বহনে অক্ষম এমন বোঝা তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া। মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার প্রয়োজন নেই তাদের, বরং নারীদের উচিত সন্তান জন্ম দেওয়া। নারী বিক্ষোভকারীরা আফগানিস্তানের সব নারীর প্রতিনিধিত্ব করেন না।

নারীরা সমাজের অর্ধেক বলে সাক্ষাৎকারগ্রহণকারী দাবি করলে তালেবান মুখপাত্র বলেন, আমরা তাদের অর্ধেক মনে করি না। তারা কী রকম অর্ধেক? তাদেরকে সমাজের অর্ধেক দাবি করার মধ্য দিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

হাশিমি বলেন, নারীদের অর্ধেক বলার অর্থ হচ্ছে, তাদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া, এর বাইরে কিছু না। তাদের অধিকার হরণ করা তখন ইস্যু হবে না। তখন যাচ্ছে-তাইভাবে নারীর অধিকার হরণ করা যাবে। গত দুই দশকে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পুতুল সরকার তাদের কার্যালয়ে যা করেছে, তা পতিতাবৃত্তি ছাড়া আর কিছু? তখন গণমাধ্যম এ নিয়ে কী বলেছিল?

আপনি সব নারীর বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ আনতে পারেন না—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সব আফগান নারীকে বুঝাইনি। চারজন নারী রাস্তায় প্রতিবাদ করছেন, তারা সব আফগান নারীর প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না। যারা আফগানিস্তানে সন্তান জন্ম দিয়ে নাগরিক বাড়াচ্ছেন, সন্তানদের ইসলামিক নৈতিকতা শিক্ষা দিচ্ছেন—ওই প্রতিবাদকারী নারীরা তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাপ্রত্যাহারের পর দেশটি থেকে আমেরিকানদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে সহযোগিতা পেয়ে তালেবানের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেশটি জানায়, তালেবান দক্ষ ও সহায়ক।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এমিলি হর্ন বলেন, কাতার এয়ারওয়েজের একটি চার্টারড ফ্লাইটে কাবুল থেকে লোকজনকে দোহায় সরিয়ে নেওয়া ছিল ইতিবাচক প্রথম পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চার্টার ফ্লাইটে মার্কিন নাগিরক ও আফগানিস্তানের আইনগত বৈধ স্থায়ী বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে তালেবান সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করেছে। তারা আমাদের সঙ্গে নমনীয়তা দেখিয়েছে—দক্ষতা ও পেশাদার আচরণ করছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, প্রায় চল্লিশ মার্কিন নাগিরক কিংবা আফগানিস্তানের স্থায়ী বাসিন্দাকে ফ্লাইটে উঠতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে ২১ জন সাড়া দিয়েছে। সামনে আরও ফ্লাইট পরিচালনা করবো আমরা।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, শতাধিক আমেরিকান নাগরিক আফগানিস্তানে রয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নেড প্রাইস বলেন, যারা সেখানে অবস্থান করছেন, তাদের সঙ্গে আফগানিস্তানের সংযোগ আছে। তারা সেখানে রয়ে যাবেন নাকি আমেরিকায় চলে আসবেন—মোটামুটি কঠিন সিদ্ধান্তই নিতে হচ্ছে তাদের। তারা এখন চলে আসতে অস্বীকার করলেও সুযোগ হারাবেন না। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পাল্টালে আমেরিকায় চলে আসতে পারবেন।

এসএইচ-২৫/১০/২১ (অনলাইন ডেস্ক)