মধু সংগ্রহের ছবি তুলে বিশ্বসেরা বাংলাদেশের মুশফিক

মধু

ম্যানগ্রোভ বা বাদাবন জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব ঠেকানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাজনের এক একর রেইন ফরেস্ট বা চিরহরিৎ বনভূমি যতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিতে সক্ষম, একই পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের ক্ষমতা আছে এক একর (চার হাজার বর্গমিটার) ম্যানগ্রোভ অরণ্যের।

ম্যানগ্রোভ অরণ্য প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে উপকূলের ভাঙন রোধেও কাজ করে। ‘আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল ম্যানগ্রোভ অ্যাকশন প্রজেক্ট নামের একটি সংস্থা। তাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বের বাদাবনগুলোর সংরক্ষণ। প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হলো জঙ্গলের জীবন, উপকূলের মানুষ ও বাদাবনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা।

পাশাপাশি এটাও দেখানো হয়েছে পানির নিচে এবং ওপরে যে অসাধারণ প্রাণবৈচিত্র্য আছে, তা কতটা ভঙ্গুর। সেই প্রতিযোগিতায় সার্বিকভাবে বিজয়ী হলেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহমান। সুন্দরবনে মৌয়ালরা কিভাবে বিশাল মৌমাছির ঝাঁককে তাড়িয়ে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন, সেটার ছবি তুলেছেন তিনি। তাঁর ছবিটির নাম ‘অ্যা ব্রেভ লাইভলিহুড—দুঃসাহসিক এক জীবিকা’।

৬৫টি দেশ থেকে পাঠানো এক হাজার ৩০০ ছবির মধ্যে এ ছবিটি এই বছরের প্রতিযোগিতায় সর্বসেরা ছবি নির্বাচিত হয়েছে। এটা সংস্থাটির সপ্তম বছরের প্রতিযোগিতা।

প্রতিযোগিতার বিচারক রবার্ট আরউইন বলেছেন, ‘পৃথিবীতে আদিতে যে পরিমাণ ম্যানগ্রোভ বা বাদাবনের আচ্ছাদন ছিল, এখন তার অর্ধেকেরও কম টিকে আছে। তাই ফটোগ্রাফির মধ্য দিয়ে ভঙ্গুর এই প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করা এখন খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মুশফিকুর রহমান বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বংশপরম্পরায় মধু সংগ্রাহক এই মৌয়ালদের রক্ষাকর্ত্রী হলেন বনবিবি—অরণ্যের দেবী। বিপত্সংকুল বাদাবনে বাঘ এবং কুমির-কামটের বিপদ থেকে মৌয়ালদের তিনিই রক্ষা করেন। বাংলাদেশের সুন্দরবনে এবং এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ভারতীয় অংশেও পুরনো নানা জীবিকা ও মানুষের প্রথাগত জীবনের সঙ্গে জঙ্গলের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে টিকে রয়েছে।’