এক ডোজ ওষুধের দাম ৩৫ কোটি টাকা

3d rendering red blood cells in vein

হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি নতুন ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বংশগত এই রোগটির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধটির মাত্র এক ডোজের দাম পড়বে ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সেই হিসেবে এটি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ওষুধ।

মূলত রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যাজনিত একটি গুরুতর রোগ হিমোফিলিয়া। এ ধরনের রোগীদের রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না। ফলে কোনো কারণে কেটে গেলে বা অস্ত্রোপচারের সময় রোগীদের শরীর থেকে রক্তপাত বন্ধ হতে চায় না। এর ফলে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়তে পারেন তারা। রক্তে বেশ কিছু প্রোটিন থাকে, যারা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এদের ‘ক্লটিং ফ্যাক্টর’ বলা হয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বুধবার (২৩ নভেম্বর) জানানো হয়েছে, হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় সিএসএল বেহরিং-এর তৈরি ওষুধটির নাম হিমজেনিক্স। পরীক্ষায় দেখা গেছে, সিএসএল বিহরিংয়ের তৈরি করা হেমজেনিক্স নামের ওষুধটি ব্যবহারের পর রোগী ৯৪ শতাংশ সুস্থ হয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, এক বছরের মধ্যে প্রত্যাশিত রক্তপাতের ঘটনা ৫৪ শতাংশ কমাতে সক্ষম হিমজেনিক্স। বর্তমানে হিমোফিলিয়া রোগীদের সম্ভাব্য গুরুতর অবস্থা নিয়ন্ত্রণে ফ্যাক্টর আইএক্স ইনফিউশন পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে।

বায়োটেকনোলজিতে বিনিয়োগকারী ব্র্যাড লোনকার বলেন, হিমজেনিক্সের দাম যদিও একটু বেশি, তবু আমি মনে করি, এটি সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম কারণ, বিদ্যমান ওষুধগুলোও অনেক ব্যয়বহুল। দ্বিতীয়ত, হিমোফিলিয়া রোগীরা ক্রমাগত রক্তপাতের ভয়ে থাকেন। তাই তাদের কাছে জিন থেরাপি আকর্ষণীয়ই হবে।

এর আগে মেরুদণ্ডের ক্ষয়রোগের চিকিৎসায় ২০১৯ সালে নোভারটিসের একটি ওষুধ অনুমোদন পেয়েছিল। ‘জোলগেনসমা’ নামে ওষুধটির দাম ছিল ২১ লাখ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এছাড়া, এ বছরের শুরুর দিকে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসায় অনুমোদন পাওয়া ব্লুবার্ড বায়ো’র তৈরি জিনটেগ্লো ওষুধের দাম ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) সেন্টার ফর বায়োলজিক্স ইভালুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক পিটার মার্কস বলেছেন, হিমোফিলিয়ার চিকিৎসায় যদিও অগ্রগতি হয়েছে, তবে রক্তপাত প্রতিরোধ ও চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো রোগীদের জীবনযাত্রার মান নষ্ট করতে পারে।

জানা যায়, ম্যাসাচুসেটসের লেক্সিংটনে ইউনিকিউর এনভি কারখানায় তৈরি হবে জিন থেরাপি হিমজেনিক্স। ২০২০ সালেই এটি বাজারজাত করার অধিকার সিএসএল বেহরিংয়ের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল ইউনিকিউর।

ইউনিকিউর এনভির তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ হিমোফিলিয়া বি’তে আক্রান্ত। সেই তুলনায় হিমোফিলিয়া এ’র রোগী প্রায় পাঁচগুণ বেশি।

এসএইচ-১৮/২৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)