শ্রদ্ধাকে ৩৫ টুকরা করতে ব্যবহৃত ৫ ছুরি উদ্ধার

ভারতের দিল্লিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করে মৃতদেহ ৩৫ টুকরা করে ফেলেন তারই প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। সেই টুকরোগুলো সংরক্ষণ করতে নতুন ফ্রিজও কিনে আনেন। এরপর ১৮ দিন ধরে দিল্লির জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরাগুলো ফেলতেন আফতাব।

বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশের বরাতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানায়, শ্রদ্ধাকে হত্যা করার পর তার দেহ টুকরো টুকরো করার জন্য যে পাঁচটি ছুরি ব্যবহার করেছিলেন আফতাব, সেই ছুরিগুলো পাওয়া গেছে। তবে একটি করাত এখনও পাওয়া যায়নি।

দিল্লি পুলিশ আরও জানায়, যে পাঁচটি ছুরি তারা উদ্ধার করেছে, প্রতিটি ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা। সেগুলোকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে আফতাবের ‘পলিগ্রাফ পরীক্ষা’(অভিযুক্ত সত্য কথা বলছেন কি না, তা যাচাই করতেই ওই পরীক্ষা করা হয়) করানোর চেষ্টা করেছিল দিল্লি পুলিশ। তবে আফতাব অসুস্থ বোধ করায় ওই পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে শ্রদ্ধার সঙ্গে আফতাবের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরিবারের অমতেই আফতাবের সঙ্গে লিভ-ইন শুরু করেছিলেন শ্রদ্ধা। সেই প্রেমিকের হাতেই শেষে খুন হতে হলো মহারাষ্ট্রের পালঘরের ওই তরুণীকে। গত ১৮ মে আফতাব আমীন পুনেওয়ালা নামে এক যুবকের সঙ্গে ঝগড়া হয় তার প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারের। এর জেরে সেদিনই শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে আফতাব। হত্যার পর শ্রদ্ধার মরদেহ কেটে ৩৫ টুকরো করে আফতাব। এরপর ১৮ দিন ধরে দিল্লির মেহরাউলি জঙ্গলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ফেলে দেন।

সেপ্টেম্বরে শ্রদ্ধার এক বন্ধু তার ভাইকে জানান, শ্রদ্ধার মোবাইল ফোন দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ। এরপর শ্রদ্ধার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট চেক করেও এই সময়ের মধ্যে সেখানে তার কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে চলতি নভেম্বরের শুরুতে ভুক্তভোগীর বাবা বিকাশ মদন ওয়াকার মুম্বাই পুলিশের কাছে মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অভিযোগ করেন।

প্রাথমিক তদন্তে শ্রদ্ধার শেষ অবস্থান পাওয়া যায় দিল্লিতে। এর ভিত্তিতে, মামলাটি দিল্লি পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। শ্রদ্ধার বাবা আফতাবের সঙ্গে তার মেয়ের সম্পর্কের কথা পুলিশকে জানান এবং তার মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার পেছনে আফতাবের জড়িত থাকার বিষয়ে নিজের সন্দেহের কথা জানান।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে ১২ নভেম্বর আফতাব পুনেওয়ালাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি শ্রদ্ধাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এসএইচ-১৭/২৫/২২ (অনলাইন ডেস্ক)