‘ও’ পজিটিভ রোগীকে ‘এবি’ পজিটিভ রক্ত পুশ!
এক গ্রুপের রক্তের বদলে অন্য গ্রুপের রক্ত দেয়ায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা। প্রতিবাদ করায় উল্টো রোগীর স্বজনদের ওপর চড়াও হন চিকিৎসক এমন অভিযোগও ভুক্তভোগীদের। যদিও চিকিৎসকের দাবি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়ের মৃত্যুর পর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে বুকফাটা আহাজারি করতে থাকেন মীমের মা ও স্বজনরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে মেয়ে সন্তান জন্ম দেন সাদুল্লাপুরের কামারপাড়ার মীম আক্তার। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. তাহেরা আক্তার মনির পরামর্শে ‘এবি’ পজেটিভ রক্ত দেয়ার পরই মারা যায় মীম।
মীমের মা জানান, দুই ব্যাগ রক্ত (এবি পজেটিভ) মীমের শরীরে দেয়া হয়। রক্ত দেয়ার সময় মীম অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। এ সময় বারবার ডেকেও তিনি চিকিৎসককে পাননি।
রোগীর স্বজনরা বলছেন, স্থানীয় ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে পরীক্ষার পর তারা জানতে পারেন মীমের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজেটিভ। পরে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টটি তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রিপোর্টটি ফের চাইতে গেলে গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশের সামনেই তাদের দিকে তেড়ে আসেন সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহিনুল ইসলাম। এ সময় রোগীর স্বজনরা ওই চিকিৎসকের প্রতি চড়াও হলে পরিস্থিতি প্রায় বেসামাল হয়ে যায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও গাইনী চিকিৎসক ডা. তাহেরা আক্তার মনি সাংবাদিকদের জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মারা গেছেন রোগী। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মজিবর রহমান।
এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মেহেদী ইকবাল বলেন অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী মিমের মৃত্যুর পর তার মা হারা হয় ফুটফুটে কন্যা সন্তানটি।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তাদের পরিবারের অনেকেরই রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজিটিভ। কিন্তু ডাক্তার ‘এবি’ পজিটিভ রক্ত চাওয়ায় তারা সেই গ্রুপের রক্ত সংগ্রহ করেন। চিকিৎসক ভুল গ্রুপের রক্ত পুশ করার পরই রোগীর অবস্থার অবনতি হয় এবং পরে তিনি মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে।
এসএইচ-২২/১৪/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)