সকালের নাস্তা খাওয়ার সময় যে ৫ টি ভুল করে থাকেন আপনিও!

সকালের নাস্তা খাওয়ার

গবেষণায় দেখা গেছে যে, বেশীরভাগ মানুষ সকালে খুব অল্প পরিমাণ খেতে অথবা একেবারে না খেতে পছন্দ করে থাকেন। এবং যারা সকালে নাস্তা করা থেকে বিরত থাকেন, দেখা যায় তারা দুপুরে খাওয়ার সময় অনেক বেশী পরিমাণে খাদ্য এবং ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলেন একবারে।  যা শরীরের জন্য ভালো নয়। সকালে সঠিকভাবে খাবার খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং সকালের নাস্তা খাওয়ার সময় আমরা প্রায় সকলেই যে ভুলগুলো করে থাকি সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন এই ফিচার থেকে।

১/ খুব তাড়াহুড়ার মধ্যে সকালের নাস্তা খেয়ে ফেলেন আপনি 

সকালে অফিসে যাবার জন্যে ঘুম থেকে ওঠাটা খুব কষ্টকর। তাই যখন সকালের অ্যালার্ম বাজতে শুরু করে আমরা একেবারেই পাত্তা দিতে চাই না। বরং, অ্যালার্ম বন্ধ করে অথবা স্নুজ করে আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিতে চাই। তবে অফিসের সময় তো আর পেছাবে না। তাই অল্প কিছুক্ষণ আরামের পরে তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা খাওয়ার সময় আর আমাদের হাতে থাকে না।

তখন দেখা যায় আমরা বাসে কিংবা রিকশাতে যেতে যেতে রাস্তাতেই অল্প কিছু খেয়েই আমাদের নাস্তা সেরে নেই। আপনি হয়ত ভাবতেই পারেন, এতে ক্ষতির কি আছে! কিন্তু গবেষণা মতে জানা গেছে, খাওয়ার সময় আমাদের ব্রেইন অন্য কোন কিছু নিয়ে চিন্তারত থাকলে, আবচেতনেই আমরা অনেক বেশী ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলি! এছাড়াও, কাজের ব্যস্ততার জন্যে খাওয়ার সময় আমরা সঠিকভাবে খাওয়ার চিবিয়ে খাই না। যার ফলে খাওয়ার পরিপাকে সমস্যা দেখা দেয়।

২/ আপনি আঁশ জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাচ্ছেন

সকালের নাস্তায় খুব বেশী পরিমাণে চিনি অথবা মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে, খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরেই আপনি আবারও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়বেন। কারণটা কি জানেন? কারণ চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য খাওয়ার সাথে সাথেই আপনার রক্তে চিনির পরিমাণ অনেক বেশী বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা যত দ্রুত বেড়ে যায়, তত দ্রুতই নেমে যায়।

অন্যদিকে আঁশজাতীয় খাদ্য আপনার শরীরের জন্য যেমন ভালো, তেমন এই সকল খাবার পরিপাক হতেও অনেক সময় নেয়, ফলে আপনার পেট দীর্ঘ সময় ধরে ভরা থাকে। আঁশ জাতীয় খাদ্যের মধ্যে ওটস, বিভিন্ন ধরণের শাক এবং সবজী প্রভৃতি।

৩/ আপনি পর্যাপ্ত আমিষ খাদ্য খাচ্ছেন না

শুধুমাত্র আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াটাই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত নয়। আঁশযুক্ত খাবার এর পাশাপাশি আপনাকে প্রোটিন জাতীয় খাদ্যও গ্রহণ করতে হবে, যা আপনার পেট ভরা রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনার সারাদিন পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করবে। তাই আঁশযুক্ত খাবারের পাশাপাশি প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে সকালের নাস্তায়। প্রোটিন খাদ্য হিসেবে সবজী এবং ডিমের অমলেট এর সাথে হোল গ্রেইন আটার রুটি খেয়ে নিতে পারেন। অথবা, হোল গ্রেইন পাউরুটির সাথে মাখন অথবা ফল।

৪/ আপনি ফ্যাট এড়িয়ে যাচ্ছেন

ফ্যাট জাতীয় খাদ্য আপনাকে মোটা বানিয়ে দেবে? এমন ভ্রান্ত ধারণা অনেক আগেকার যুগের। এখনকার সময়ে সঠিক খাদ্যাভাসের জন্য ফ্যাট অথবা স্নেহ জাতীয় খাদ্য থাকাটা খুবই জরুরি।  স্বাস্থ্যকর স্নেহ জাতীয় খাদ্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে রাখতে হবে পরিমাপ মতো। শুধু আঁশযুক্ত খাবার অথবা প্রোটিন জাতীয় খাবার আপনার শরীরের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে না।

৫/ আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য খাচ্ছেন না

সকালের শুরুটা যদি পরিপূর্ণ খাদ্য দিয়ে হয়ে থাকে তবে আপনার সারাটাদিন সুস্থ এবং ভালোভাবে কাটবে। পরিপূর্ন খাদ্য বলতে পর্যাপ্ত খাদ্য বোঝানো হচ্ছে। অনেকেই সকালের নাস্তায় বেশী খাবার খেতে চান না। তবে নিয়ম হচ্ছে সকালের নাস্তাতেই সবচেয়ে বেশি খাদ্য গ্রহণ করা কারণ সকালে নিয়ম মেনে পুষ্টিকর খাদ্য পেট ভরে খেলে মেটাবলিজম অনেক ভালোভাবে কাজ করে। যে কারণে, দুপুরে খাবার আগ পর্যন্ত আপনার ক্ষুধার্ত হবার সম্ভবনা একেবারেই থাকে না।

আরএম-২৯/১০/০২ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)