গর্ভাবস্থায় চুলকানি হলে যা করণীয়

গর্ভাবস্থায় চুলকানি

গর্ভাকালীন হালকা চুলকানি হওয়া নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রায় ২০ শতাংশ গর্ভবতী মহিলার চুলকানির সমস্যা হয়। এ সময় মায়েদের পেট কিংবা স্তনের আশপাশে চুলকানি বেশি হতে পারে, কারণ এ দুটো স্থানের চামড়াই এ সময় প্রসারিত হয়। শুষ্ক ত্বক এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণেও অনেক সময় চুলকানি দেখা দিতে পারে।

প্রতিকার : চুলকানি হলে অবশ্যই যত কম সম্ভব চুলকানোর চেষ্টা করুন। বেশি চুলকালে ত্বক আরও ফেটে যেতে পারে এবং ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। যদি শুষ্ক কিংবা প্রসারিত চামড়ার কারণে গর্ভাবস্থায় চুলকানি দেখা দেয় তাহলে চুলকানির স্থানে বেশি বেশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুতে হবে। অথবা আইস প্যাক কিংবা ঠাণ্ডা পানিতে চুবানো কাপড় ৫ থেকে ১০ মিনিট কিংবা চুলকানি কমা পর্যন্ত দিয়ে রাখা যেতে পারে।

ত্বক আর্দ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। এগুলো সুগন্ধিযুক্ত না হলেই বেশি ভালো। একজিমা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শকৃত ক্রিম অথবা লোশন ব্যবহার করতে হবে।

চুলকানি প্রতিকারে অ্যালোভেরার জুড়ি নেই। ত্বকের যে স্থানে চুলকানি হয় সেখানে একটি সতেজ অ্যালোভেরা পাতা থেকে রস বের করে লাগিয়ে রাখলে চুলকানি কমে যাবে। ত্বক সেনসিটিভ হলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাছাড়া নারকেল তেলও ব্যবহার করা নিরাপদ।

প্রতিরোধ : গর্ভাবস্থায় হয়তো চুলকানি পুরোপুরি প্রতিরোধ নাও হতে পারে। কিন্তু কিছু উপায়ে হয়তো-বা এর উপসর্গ কমানো যাবে।

গোসল দ্রুত শেষ করতে হবে, নাহলে ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। গা মোছার সময় টাওয়েল দিয়ে বেশি ঘষা উচিত না। হালকা করে চেপে চেপে শরীর শুকিয়ে নিতে পারেন। খুব বেশি গরমে যাবেন না। গরমে চুলকানি বাড়তে পারে। সুতি এবং ঢিলে জামা-কাপড় পরুন। এর ফলে জামা-কাপড়ের সঙ্গে ত্বকের ঘর্ষণের সম্ভাবনা কম থাকে ত্বকে বাতাস চলাচলে সাহায্য করে।কাপড়ের ধোয়ার ক্ষেত্রে সুগন্ধি মুক্ত ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। কাপড় ধোয়ার কাজে গরম পানিও ব্যবহার করতে পারেন। স্ট্রেস এবং উদ্বেগ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। এগুলোর কারণেও কিন্তু গর্ভাবস্থায় চুলকানি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন : যদি চুলকানির সঙ্গে র‌্যাশ দেখা যায়, হাতের এবং পায়ের তালুতে খুব বেশি চুলকানি হয় তবে দ্রুতই তা ডাক্তারকে জানাতে হবে কারণ এগুলো মারাত্মক কোনো সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। অল্প চুলকানিতে চিন্তার কিছুই নেই, কিন্তু যদি চুলকানি বেড়ে যায়, তবে এটি অবস্টেট্রিক কোলেস্টাসিস (ওসি) নামক একটি সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। এই রোগ শতকরা ১ জন গর্ভবতী মহিলার হয়ে থাকে, এবং তাদের চিকিৎসার আওতায় আনা দরকার। অবস্টেট্রিক কোলেস্টাসিস (ওসি) একটি মারাত্মক লিভার ব্যাধি যা গর্ভাবস্থায় দেখা দিতে পারে।

আরএম-০২/০৯/০৪ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)