গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ শরীরচর্চা

গর্ভবতী মহিলাদের

গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে প্রচলিত ধারণাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তাদেরকে শুধু বিশ্রাম নিতে হবে। তবে এই নয় মাসের গর্ভাবস্থায় শরীর সুঠাম রাখাও মা ও শিশু উভয়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এজন্য বিশেষজ্ঞরা কার্ডিও এমনকি ভারোত্তোলন ব্যায়ামেরও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ভারতীয় পেশাজীবি পুষ্টিবীদ এবং শরীরচর্চা বিশেষজ্ঞ শিভাম ভান্ডারি জানিয়েছেন এসময়ের শরীরচর্চা সম্পর্কে খুঁটিনাটি।

পরিকল্পনা: গর্ভধারণের আগে থেকেই যারা শুধু কার্ডিও ব্যায়াম করছেন তারা ভারোত্তোলন ব্যায়ামের কথা ভাবতে পারেন। এতে শরীরে পেশি গঠন হবে, যা সন্তান বয়ে বেড়ানো এবং গর্ভবস্থার মানসিক চাপ সামলানোর শক্তি যোগাবে।

শুরুটা ধীরে: যেকোনো শরীরচর্চা শুরু করার আগে নিজের ‘ফর্ম’ ঠিক করতে হবে। এজন্য অভিঙ্গদের পরামর্শ নিতে হবে, শুধু ইন্টারনেটে ভিডিও দেখে কাজ হবে না। কারণ, ভিডিও দেখে ভুল করলে শুধরে দেওয়ার কেউ নেই। আবার অভিজ্ঞদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করলেও চলবে না। ব্যায়ামের নাম, তা কোন পেশির উপর প্রভাব ফেলে, এর সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে। আর সবসময়ই কারও পর্যবেক্ষণে ব্যায়াম করতে হবে।

ধৈর্য: শরীরচর্চার ফলাফল রাতারাতি চোখে পড়বে না। সঠিকভাবে শরীরচর্চা করলে, বিশ্রাম নিলে এবং পুষ্টিকর খাবার খেলে সময় লাগলেও ফলাফল পাবেনই। এই তিনটির যেকোনো একটিতে ভুল হলেই ফলাফল পেতে দেরি হবে।

একই ব্যায়াম নয়: শুধু ভারোত্তোলন ব্যায়াম করলেই হবে না। সঠিকভাবে ব্যায়াম করতে হলে সঠিকভাবে নড়াচড়া করার সামর্থও থাকতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজনীয় ‘স্ট্রেচিং’ করতে হবে। ‘স্ট্রেচিং’ এবং সঠিকভাবে নড়াচড়া করার সামর্থ অর্জন করতে পারলে পেশির শক্তভাব দুর হবে এবং ভারোত্তোলন ব্যায়াম করা সহজ ও উপকারী হবে।

পুষ্টি: ব্যায়াম করছেন ঠিকই কিন্তু সেই অনুযায়ি পুষ্টিকর খাবার না খেলে ব্যায়াম উপকারের চাইতে ক্ষতিই বেশি করতে পারে। আর গর্ভবতী অবস্থায় যদি কেউ ব্যায়াম করেন তবে তার স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা আরও বেশি জরুরি। এজন্য নিচের বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে।

– চর্বি বর্জন করা চলবে না। হরমোন তৈরি ও সঞ্চালন, চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিনের সঞ্চালন ও শোষণ, স্নায়ু রক্ষাকারী আবরণের ক্ষয়পূরণ, কোষের ঝিল্লী তৈরি ইত্যাদিতে চর্বি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে খাদ্যাভ্যাসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভালোমানের চর্বি নেই, সেই খাদ্যাভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যগত জটিলতা ডেকে আনতে পারে।

শরীরের অবকাঠামো তৈরির একক হলো প্রোটিন। যারা ‘রেজিস্টেন্স ট্রেইনিং’ করছেন তাদের পেশির ঘনত্ব ধরে রাখতে ও পেশির ঘনত্ব বাড়াতে প্রোটিন প্রয়োজন। এছাড়াও প্রোটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে, হরমোন ও এনজাইম উৎপাদনে সহায়তা করে এবং চুল ও নখ ভালো রাখে।

– ভিটামিন ও খনিজের মতো ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’গুলোও অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিমাসে ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট প্রোফাইল’ পরীক্ষা করাতে হবে।

আরএম-১১/২৫/০৪ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)