মুসলিমদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান এবার পড়েছে গরমকালে। এমন সময়ে রোজা রেখে শরীর চাঙ্গা করতে খাদ্যাভ্যাসের ওপর নজর রাখা খুবই জরুরি। রমজানে বেশির ভাগ মানুষই অস্বাস্থ্যকর ভাজাপোড়া খেতে পছন্দ করেন। এতে করে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকেই। অথচ এ সময়ে খাবারের বিষয়ে খুবই সচেতন থাকা উচিত।
রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু তার জন্য মেনে চলতে হবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির বারজিল হসপিটালের ডায়েটিশিয়ান রাহমা আলী রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জরুরি কিছু কথা বলেছেন। তিনি এমন কিছু খাবারের কথা জানিয়েছেন, যেগুলো খাওয়া যাবে না ইফতার ও সেহরিতে।
রাহমা আলী জানান, রমজান মাসে অনেকেই শুধু ইফতার ও সেহেরি খান। ফলে সারা বছরের চেয়ে এ সময়ে খাদ্যাভ্যাসে বড় পরিবর্তন আসে। এ কারণে কী খাবেন, কী খাবেন না, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
সেহরি
সেহরির সময় যা খাওয়া হয়, সেটাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরকে শক্তি দেয়। এ সময়ে সুষম খাবার খাওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, যথেষ্ট পানির জোগান দেয়, এমন খাবারও খাওয়া উচিত। এ সময়ে এড়িয়ে চলা উচিত তিন ধরনের খাবার।
১. সরল শর্করা
এ ধরনের শর্করা খুব কম সময়ে হজম হয়ে যায়। যেমন: চিনি, সাদা আটা, ময়দার তৈরি খাবার, কেক, পাউরুটি বা পেস্ট্রি। সেহরির সময় এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। এগুলো মাত্র তিন থেকে চার ঘণ্টা শক্তি জোগায়।
২. লবণাক্ত খাবার
রোজার সময়ে শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য ব্যাহত হলে প্রচণ্ড পিপাসা পায়। এ কারণে লবণ মাখানো বাদাম, চিপস ও সয়া সস দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। পাতে অতিরিক্ত লবণ নেবেন না।
৩. ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
চা, কফি, কোক বা পেপসির মতো পানীয় এবং চকলেটযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকুন। এগুলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, অস্থিরতা তৈরি করে। এ ছাড়া এগুলো ডাইইউরেটিক, অর্থাৎ শরীর থেকে পানি বের করে দেয়। ফলে এ ধরনের পানীয় পানে সারা দিন পিপাসায় ভুগবেন।
ইফতার
সেহরি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হলেও ইফতারের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। রোজা ভাঙার সময়ও সুষম খাবার রাখুন। বিশেষ করে গরমকালে বেশি ঘাম হওয়ায় শরীর থেকে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। তাই কলা অবশ্যই রাখুন ইফতারের পাতে। ইফতারের সময় কিছু খাবার বাদ দিতে হবে।
১. বেশি চিনিযুক্ত খাবার
মিষ্টি ও চকলেটের মতো খাবার ইফতারে না খাওয়াই ভালো। ইফতারে এমন চিনিযুক্ত খাবার খেলে দ্রুত বাড়বে ওজন। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন খাওয়া হলে এগুলো অন্য রোগেরও সৃষ্টি করতে পারে।
২. ভাজা খাবার
তেলতেলে ভাজা খাবার (যেমন: চপ, সিঙ্গারা, সমুচা, বেগুনি, পাকোড়া) ছাড়া অনেকেই ইফতারের কথা ভাবতেই পারেন না। আসলে কিন্তু এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। পাশাপাশি তেলতেলে তরকারি ও তেলে ভাজা পিঠাও এড়িয়ে চলুন।
৩. কার্বোনেটেড পানীয়
তৃষ্ণা কমাতে অনেকেই কোক, পেপসি, স্প্রাইটের মতো প্রক্রিয়াজাত পানীয় পান করেন ইফতারে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। তৃষ্ণা মেটাতে পানি ও ডাবের পানি রাখতে পারেন।
আরএম-১৩/০৭/০৫ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)