কাঁঠালবিচির বিস্ময়কর ব্যবহার ও পুষ্টিমান

কাঁঠালবিচির বিস্ময়কর

শুধু ফলেই নয়, গুণ রয়েছে কাঁঠালের বীজেও। কাঁঠালের বীজের উপকারিতা জানলে আর কোনোদিন সেটিকে ফেলে দেয়ার কথা মাথায় আনবেন না। কাঁঠালবিচি ফেলে না দিয়ে মিহি গুড়ো করে মধু আর দুধের সাথে মিলিয়ে মাস্ক বানিয়ে মুখে দিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখের বলিরেখা কমে যাবে। অন্যান্য উপকারিতা- কাঁচা কাঁঠাল ও এর বিচিতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার শ্বেতসার, আমিষ ও খনিজ পদার্থ। কাঁচা কাঁঠাল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের তরকারি রান্না করে আর এর শুকনো বিচি ভেজে বিকেলে চায়ের সাথে খাওয়া যায় আবার তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়।

পুষ্টিমান: প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের বিচিতে শক্তি পাওয়া যায় ৯৮ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট ৩৮.৪ গ্রাম, প্রোটিন  ৬.৬ গ্রাম, ফাইবার ১.৫ গ্রাম, চর্বি ০.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ০.০৫ থেকে ০.৫৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ০১৩, আয়রন ১.২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৪.০৭ মিলিগ্রাম রয়েছে। কাঁঠালের বিচি ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি১২ এর ভালো উৎস। এছাড়াও আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, থায়ামিন, নায়াসিন, লিগন্যান, আইসোফ্ল্যাভোন এবং স্যাপোনিনের মতো ফাইটো ক্যামিক্যালস।

উপকারিতা

১. কাঁঠালের বিচিতে থাকা এটি অক্সিডেন্টগুলো ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং বার্ধক্যের প্রভাব সৃষ্টিকারি উপাদানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।

২. ফাইবার ও কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এর কারণে এর প্লাইসেমিক ইন্ডেক্স কম। ফলে এটি ওজন কম বাড়িয়েই জুগাতে পারে অনেক এনার্জি।

৩. কাঁঠালবিচির প্রোটিন অত্যন্ত উপকারি। মাছ, মাংস যাদের কম খাওয়া হয় তাদের জন্য আমিষের চাহিদা মেটাতে কঠাল বিচি উৎকৃষ্ট খাবার।

৪. কাঁঠালবিচির জীবানুনাশক গুনও রয়েছে। এটি Escherichia coli ও Bacillus megaterium ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর এবং এতে থাকা বিশেষ উপাদান এইডস রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নয়নে সফল বলে প্রমাণিত হয়েছে।

৫. এতে থাকা পটাশিয়াম ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখে।

আয়ুর্বেদিকগুণ

১. কাঁঠালের বিচি বিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

২. এটি হজম শক্তি বাড়ায়।

৩. যৌন আনন্দ বাড়ায়।

৪. ধারণা করা হয় কাঁঠালের বিচি টেনশন ও নার্ভাসনেস কাটাতে উপকারি।

৫. এ্যালকোহল জাতীয় মাদকের প্রভাব দূর করার জন্যও এর ব্যবহার রয়েছে।

৭. এটি রক্তস্বল্পতা রোধে দারুণ ভূমিকা রাখে। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তাদের জন্যে কাঁঠাল উপকারি হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

৮. কাঁঠালে থাকা উচ্চ আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে পাইলসের বুকি কমাতে সাহায্য করে।

৯. থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

১০. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে কাঁঠাল রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে এবং এটি দেহের সর্বত্র রক্ত চলাচলে সাহায্য করে।

১১. কাঁঠালের অন্যতম উপযোগিতা হলো ভিটামিন সি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে ভিটামিন ‘সি’। চুল ভালো রাখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

১২. কাঁঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর স্কির্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও আমাদেরকে সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

১৩. কাঁঠালে আছে ভিটামিন বি-৬ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

১৪. বদহজম রোধ করে কাঁঠাল।

১৫. কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা দাঁত, মাঢ়ি ও মুখের ঘা জাতীয় রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

আরএম-৫৩/০৩/০৬ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)