ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াবেন যেভাবে

ক্যান্সারের ঝুঁকি

ক্যান্সার অনেক সময় নিঃশব্দে হানা দিতে পারে আপনার সুখের জগতে। স্বাস্থ্যসচেতন না হলে হয়তো ঘুণাক্ষরেও টের পাবেন না কীভাবে দুঃস্বপ্নময় জীবনের দিকে পা বাড়াতে যাচ্ছেন আপনি। ভাগ্যবান হলে অনেক সময় অন্যান্য সাধারণ রোগ পরীক্ষার সময় ঘটনাচ্ছলে রোগীরা টের পান যে, তাদের শরীরে নিঃশব্দে ঢুকে পড়েছে ঘাতক ক্যান্সার। এরপর শুরু হয় যুদ্ধ। শুধু বেঁচে থাকার যুদ্ধ। রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, দেশ-বিদেশের অনকোলজিস্ট, ব্যাপক টাকা-পয়সা খরচ করে অবশেষে একদিন জেগে ওঠেন একজন ক্যান্সার সারভাইভার অকুতোভয় যোদ্ধা। এসবই প্রাথমিকভাবে শরীরে দানা বেঁধে থাকা ক্যান্সারের গল্প। কিন্তু এমন কিছু ক্যান্সার রয়েছে, যা কি-না আপনাকে ভেবে দেখার সময় দেবে। আর এসব হলো সেকেন্ডারি ক্যান্সার। আশা করি একটু সচেতন হলেই এসব ক্যান্সারকে আপনি পরাজিত করতে পারবেন।

শৈশবের ক্যান্সার

কোনো কারণে ডাক্তারের নির্দেশ মতো বাচ্চার পেটের সিটি স্ক্যান করতে গিয়ে ধরা পড়ল পেটের নালিতে রয়েছে কিছু পলিপ। এসব পলিপের সব না হলেও কেউ কেউ ক্যান্সারের ভবিষ্যৎ বার্তা বহন করে থাকে। সুতরাং এসব জানামাত্রই আর হেলাফেলা নয়। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন সময়মতো। এমনই এক ধরনের রোগ লিফ্রওমিনি সিন্ড্রোম। শুরুতে ভদ্রগোছের মনে হলেও সময়ান্তরে এ রোগটি থেকে দেখা দিতে পারে রক্তের ক্যান্সার লিউকোমিয়া, সারকোমা, ব্রেইন আর স্তনের ক্যান্সার।

পারিবারিক ক্যান্সার

ওই যে বললাম পলিপের কথা। ওটা অনেক সময় বংশানুক্রমে আপনার শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। স্তনের ক্যান্সার এবং মলদ্বারের ক্যান্সারও পারিবারিকভাবে জিনগত প্রভাবে আপনার শরীরে বিস্তার লাভ করতে পারে, যেহেতু জিনকে আর বদলাতে পারবেন না। এজন্য শরীরের স্ট্ক্রিনিং করান চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক। আর যদি কোনোভাবে প্রাথমিক স্তরে ক্যান্সারের অস্তিত্ব টের পেয়ে যান তখন দ্বিধাদ্বন্দ্বে না পড়ে চিকিৎসা শুরু করে দিন গুরুত্ব সহকারে। কেননা দেখা গেছে, প্রাথমিক স্তরে ক্ষতিকর টিউমার বা ক্যান্সারের উপস্থিতি ধরা পড়লে সেখান থেকেও নিস্তার পাওয়া সম্ভব।

বার্ধক্য ক্যান্সার উঁকি দেওয়ার সময়

বয়স যতই এগোয় আপনি কিন্তু ধীরে ধীরে ক্যান্সারের ঝুঁকির দিকে পা বাড়াচ্ছেন। কত মানুষই নির্বিঘ্নে পার করে দিচ্ছেন ষাট, সত্তর, আশি বছর। আপনার ভাবনা কী? অনুমান নয়।

গবেষণা বলছে, সজাগ না হলে বয়সকালে যে কোনো সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। হাড়ের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, রক্তের ক্যান্সার- এসবের সঙ্গে বার্ধক্যের সম্পর্ক রয়েছে।

জীবনাভ্যাস

লাইফস্টাইলটা বদলে নেওয়া কষ্টের ব্যাপার। কিন্তু যেভাবে চলছেন, উড়োধুড়ো বোহেমিয়ান জীবন। শরীরের খোরাক জোগাতে জাঙ্ক ফুড, তৈলাক্ত খাবার, অসময়ের খাদ্যাভ্যাস- এসব আপনার জন্য ভালো কিছু বহন করে আনতে পারে না।

জেনে নিন ক্যান্সার এড়াতে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস-

-ভিটামিন সমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস করুন। টমেটো, শিম, ঢেঁড়স, পেঁপে, গাজর, ব্রকলি রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়।

-প্রতিদিন ৩০ মিনিট অথবা সপ্তাহে পাঁচ দিন ব্যায়াম করুন নিবিষ্ট মনে।

-স্থূলতা নয়। বিএমআই (ওজন/উচ্চতা ২) বয়স অনুযায়ী ঠিক রাখুন।

ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। পরোক্ষ ধূমপান থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।

-মদপান করা থেকে বিরত থাকুন।

-সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি যেন আপনার ত্বকসহ শরীরের কোনো ক্ষতি না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

আরএম-১৪/২৩/০৬ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)