অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করার ৯ উপায়

অনিয়মিত পিরিয়ড

অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়ে সমস্যায় ভোগেন অনেক নারীই। এর নানা কারণ থাকতে পারে। যেমন অধিক মানসিক চাপ, পরিশ্রম, দুর্বলতা, জীবনযাত্রায় বড় কোনো পরিবর্তন। চিকিৎসকেরা পিরিয়ড ঠিক করার জন্য যেসব পিল দিয়ে থাকেন তা খেলে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ভয় থাকে। মোটা হয়ে যাওয়া, খাবারে অরুচি, ব্রণ, মাথাব্যথা, পা ব্যথা, পেট ফাঁপাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জেনে নিন এমনকিছু উপায় যার মাধ্যমে আপনি সহজেই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দূর করতে পারবেন-

আদা: ১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ পরিমাণ মিহি আদা কুঁচি নিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এখন এর সঙ্গে অল্প চিনি বা মধু মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর এই পানীয়টি তিন বেলা খাবেন। এই পানীয়টি ভরা পেটে খেতে হবে। কয়েক মাসের মধ্যেই সুফল পাবেন। আদা পিরিয়ড সাইকেল রেগুলেশনে সাহায্য করে এবং অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করে।

কাঁচা পেপে: কাঁচা পেপে পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে। কাঁচা পেপে জরায়ুর মাসল ফাইবার কন্ট্রাকশনে সাহায্য করে। পরপর কয়েক মাস নিয়মিত কাঁচা পেঁপের রস খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হয়, তবে পিরিয়ড চলাকালীন এটি না খাওয়াই ভালো।

কাঁচা হলুদ: পিরিয়ড নিয়মিত করতে এবং শরীরে হরমোন ব্যাল্যান্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে হলুদ। কাঁচা হলুদ জরায়ুর মাংসপেশী সঙ্কোচন-প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এককাপ দুধে চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ কাঁচা হলুদ নিয়ে মধু বা গুঁড় দিয়ে কিছুদিন খেয়ে দেখুন, পরিবর্তন নিজেই টের পাবেন।

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর শাঁস রূপচর্চার পাশাপাশি পিরিয়ড নিয়মিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি হরমোন রেগুলেশনে সাহায্য করে। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তাজা অ্যালোভেরা পাতার রস সামান্য মধুর সাথে মিশিয়ে খান৷ তবে পিরিয়ড চলাকালীন খাবেন না।

দারুচিনি: যে সমস্ত খাবার বহুগুণে গুণান্বিত, দারুচিনি তার মধ্যে অন্যতম। অনিয়মিত পিরিয়ড দূর করতে চা বা লেবুর রসের সাথে দারুচিনি গুঁড়া করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি পিরিয়ড নিয়মিত করার পাশাপাশি পিরিয়ড কালীন ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন: পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার একটি কারণ হলো স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। শরীরে যেসব হরমোন পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণ করে স্ট্রেসের কারণে সেগুলোর ব্যাল্যান্স নষ্ট হয়। যার ফলে ঠিকমত পিরিয়ড হয় না। যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে। পিরিয়ড নিয়মিত করতে সব থেকে উপযোগী পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এই দুটি অন্যতম।

জিরা: পিরিয়ড নিয়মিত করতে জিরা ভালো কাজ দেয়। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ জিরা নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এই পানি এবং জিরা দুটোই খেয়ে ফেলুন। সুফল পাবেন।

ফল ও সবজির জুস: খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি ফল ও সবজির জুস রাখুন। এটি শরীর ঠান্ডা রাখে ও হরমোন রেগুলেশনে সাহায্য করে। যেমন গাজর, পুদিনা পাতা, করলার রস, ভিটামিন সি জাতীয় ফলের রস ইত্যাদি দিনে দুইবার করে খেতে পারেন। তবে পিরিয়ড নিয়মিত করতে গাজর এবং আঙুরের রসই সবথেকে বেশি কার্যকরী।

অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার: পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে একটা হল রক্তে ইনসুলিন ও সুগারের মাত্রার তারতম্য। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারের মাধ্যমে আপনি এর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এজন্য এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আগে খেয়ে নিন। আপনার পিরিয়ড সাইকেল নিয়ন্ত্রণে এটি অনেক সাহায্য করবে।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলেও অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে। এজন্য এই পদ্ধতিগুলোর পাশাপাশি আয়রনজাতীয় খাবার যেমন- মুরগির মাংস, চিংড়ি, ডিম, কচু শাক, লাল শাক, পালং শাক, মিষ্টি আলু, ফুলকপি, মটরশুঁটি, তরমুজ, খেজুর, গাব, টমেটো, ডাল, ভুট্টা, শস্যদানা ইত্যাদি প্রচুর খেতে হবে।

আরএম-০৯/০৪/০৯ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)