সিজার কতবার করা যাবে ও এর জটিলতাগুলো কি? জেনে নিন সঠিক তথ্যটি

সিজার কতবার

অনেকেরই সিজার নিয়ে অনেক ভুল ধারণা থাকে। সিজারিয়ান পদ্ধতিতে কতবার ডেলিভারি করা যাবে তা নিয়ে অনেকের মাঝেই থাকে দ্বিধা দ্বন্দ্ব। তবে তা নির্ভর করে জরায়ুর অবস্থা, মূত্রাশয়ের অবস্থা, জরায়ুর আশপাশের অর্গানগুলোর সঙ্গে জরায়ু কতটা জড়িয়েছে তার ওপর।

স্বাভাবিক ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ণ হলে মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য সিজারিয়ান পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। তবে তিন বারের বেশি সিজার করা নিরাপদ নয়। অধিক সিজারের ফলে বেশ কিছু জটিলতাসহ কিছু ঝুঁকি থাকে। চলুন জেনে নেয়া যাক এই সম্পর্কে কিছু তথ্য-

সিজার কেন করা হয়?

> অনেক সময় দেখা যায় নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও প্রসব ব্যথা শুরু না হলে।

> গর্ভে থাকা অবস্থায় কোনো কারণে যদি শিশুর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়।

> প্রসব ব্যথা ৮-১২ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরেও যদি প্রসবের উন্নতি না হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে মা ও শিশুর জীবনের ঝুঁকি থাকলে।

> গর্ভফুলের অবস্থান জরায়ুর মুখে থাকলে। এছাড়া গর্ভের শিশুটি যদি অস্বাভাবিক অবস্থানে থাকে।

প্রথম এক বা দুটি শিশুর জন্ম যদি সিজারিয়ান পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। এসকল ক্ষেত্রে শিশু জন্মের জন্য সিজারিয়ান পদ্ধতিতে ডেলিভারি করা হয়ে থাকে।

সিজারিয়ান ডেলিভারিতে কিছু জটিলতা

সিজার করালেই যে সব কিছুর সমাধান, তা কিন্তু নয়। সিজারিয়ান দেলিভারিতেও থাকে অনেক জটিলতা। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই জটিলতাগুলো-

প্রসবে জটিলতা

প্রতিটি সিজারিয়ানের সঙ্গে সঙ্গে প্রসবের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। বেড়ে যায় প্রসবের সময়। একটি সিজারিয়ান এর আগের বারের চাইতে বেশি সময় লাগতে পারে। কারণ সিজারিয়ান করা হলে মায়ের উদরে ক্ষত সৃষ্টি হয়, এর ফলে অপারেশনের সময় ঘণ্টা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত রক্তপাত

যেকোনো সিজারই নরমাল ডেলিভারির চাইতে রক্তপাত বেশি হয়। কিন্তু সিজারের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে ৩.৩ ভাগ মায়ের এবং তৃতীয় সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে তা বেড়ে ৭.৯ ভাগ মায়ের হতে পারে।

অতিরিক্ত সার্জারি

সিজারের সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু অপারেশনের প্রয়োজন পড়তে পারে। প্রতিবার সিজারিয়ানের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের জরায়ুতে ক্ষতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনেক সময় এসব ক্ষত শরীরের অন্য অঙ্গের সঙ্গে লেগে যেতে পারে। যার ফলে সিজারের সময় সেই অঙ্গের কাটা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে আবার সার্জারি করার প্রয়োজন পড়তে পারে।

মূত্রথলীর ক্ষতি

সিজারিয়ানের আরেকটি কমন ঝুঁকি হলো মূত্রথলীর ক্ষতি বা ব্লাডার ইনজুরি। ব্লাডার ইনজুরি প্রথম সিজারের ক্ষেত্রেও হতে পারে তবে এর সম্ভাবনা খুব কম। তবে প্রতিবার সিজার করার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

দেরিতে সুস্থ হওয়া

সাধারণ প্রসবের থেকে সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে সেড়ে উঠতে বেশি সময় লাগে। সিজারের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে এই সেড়ে ওঠার সময়ও বাড়তে থাকে। এছাড়া একাধিকবার সিজার করা হলে তাতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।

রক্ত জমাট বাঁধা

সিজারের একটি সাধারণ ঝুঁকি হলো রক্ত জমাট বাঁধা। এটাই সম্ভবত সবচাইতে ভয়ের কারণ একই সঙ্গে মাতৃ মৃত্যুর কারণও। রক্ত জমাট বাঁধার কারণে পা ফুলে যেতে পারে এবং ব্যথা হতে পারে।

প্লাসেন্টার সমস্যা

সিজার করার ফলে প্লাসেন্টা প্রিভিয়া, প্লাসেন্টা অ্যাক্রিটা এবং প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন এর সমস্যাগুলো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরএম-২২/১৩/১০ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)