হৃদরোগ থেকে রক্ষা করবে যেসব খাবার

হৃদরোগ থেকে

হৃদযন্ত্রের সুস্থতার জন্য বেশ কিছু খাবার রয়েছে। যেগুলো খেলে হৃদরোগ থেকে মুক্তি মেলে। হৃদযন্ত্রকে বলা হয় শরীরের ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন বিকল বা আক্রান্ত হলে সারা শরীরে প্রভাব পড়ে। হৃদরোগ হলে রক্তচাপ, ইনডোকার্ডিক এবং করোনারি আর্টারির মতো জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই হৃদরোগ থেকে বাঁচতে আপনার খাদ্যতালিকায় নিম্নোক্ত খাবারগুলো রাখতে পারেন।

ফুলকপি

ফুলকপি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি সবজি। ফুলকপিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্র ও কিডনি ভালো রাখে। ফুলকপিতে খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, আমিষ বা প্রোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসহ রকমারি উপকারী উপাদান রয়েছে। ফুলকপি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এটি রান্না করে বা সালাদ হিসেবে খাওয়া যায় আবার আচার তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়। সবুজ পাতা দিয়ে রান্না করা স্যুপ বেশ উপাদেয়। তবে যারা কিডনি রোগে ভুগছেন তাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ফুলকপি খাওয়া মোটেও উচিত নয়। কারণ ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন ও পটাসিয়াম, যা কিডনি রোগীর জন্য ক্ষতিকর।

আলু

আলু হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। আলু ব্লাড প্রেসারকে ঠিক রাখতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। কারণ আলুতে আছে কুকোয়া-মাইনাস নামের এক ধরনের রাসায়নিক। আলুতে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ আছে। এছাড়াও আলুর খোসাতে আছে ভিটামিন ‘এ’, পটাসিয়াম, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সাইড, ফাইবারসহ প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট।

আপেল

আপেল হৃদযন্ত্র ভালো রাখে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমায়। আপেলে থাকা আয়রন রক্তশূন্যতা পূরণ করে। এর পেকটিন আঁশ ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এলডিএল কমায়। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। আপেলে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদানসমূহ, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

সয়াফুড

সয়াবিন থেকে তৈরি খাবারকে সয়াফুড বা সয়া প্রোডাক্ট বলে । আঁশ সমৃদ্ধ সয়াফুড হার্টের জন্য খুব ভালো। সয়া প্রোডাক্ট যেমনÑ সয়াদুধ, সয়াবিন, টফু ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। এই খাবারগুলো শরীর থেকে কোলেস্টেরল এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট দূর করে থাকে। সয়াফুড কেবল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে তা নয়, কার্ডিওভাসকুলার ফাংশন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। তাই খাবার মেন্যুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সয়াবিন রাখুন। সয়াবিন ভালো করে সিদ্ধ করে খান। কারণ হজমে সাহায্যকারী এনজাইম ট্রিপসিনের কার্যকলাপ কিছুটা ব্যাহত করে সয়াবিন। প্রতি ১০০ গ্রাম সয়াবিনে পাওয়া যায় ৪৩ গ্রাম প্রোটিন।

সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী তেল ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ, যা শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এটি সরাসরি হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ সূর্যমুখী তেল গ্রহণ করলে ত্বক সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে সুরক্ষিত থাকবে। হাঁপানি, অ্যাজমা, আর্থ্রাইটিসের তীব্রতা হ্রাস করতেও সূর্যমুখী তেল বিশেষ ভূমিকা রাখে।

চকলেট

স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকায় রাখুন চকলেট। প্রতিদিন একটু চকলেট খেলে আয়ু বাড়ে। হৃৎপি-কে ভালো থাকে। চকলেটকে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার একটি অন্যতম খাবার হিসেবে ধরা হয়। এটি হৃদস্পন্দন ভালো রাখে আর হৃৎপি-কেও স্বাস্থ্যকর রাখে। এক থেকে দুই পিস ছোট চকলেট শরীরে শক্তি জোগায়। শরীরকেও ফিট রাখে। তবে আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাহলে চকলেট এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। এক গবেষণায় বলা হয়, কালো চকলেট খাওয়া যাদের অভ্যাস তাদের কার্ডিওভাসকুলার পদ্ধতি অনেক ভালো থাকে। জীবনযাত্রাবিষয়ক বোল্ডস্কাইয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে হার্টের জন্য চকলেট খাওয়ার গুণের কথা। কালো চকলেটের একটি প্রধান উপাদান কোকো। এটি হদরোগ প্রতিরোধ করে। করনারি হৃদরোগ ও ভাল্বের রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

সবুজ চা

হৃদযন্ত্রের সুস্থতায় ওষুধ হিসেবে কাজ করে সবুজ চা। এটি শুধু রক্তের শিরাকেই সচল রাখে না; রক্ষাও করে। গবেষকদের ধারণা, রক্তনালির ওপর গ্রিন টির প্রভাব রয়েছে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে রক্তনালি শিথিল হয় এবং রক্তচাপের পরিবর্তন হলেও তা স্বাভাবিক থাকতে পারে। এর ফলে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

আরএম-২০/১৩/১১ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)