ফ্লু’র সম্ভাবনা দেখা দিলে কী করতে হবে?

সম্ভাবনা দেখা

আবহাওয়ার পরিবর্তনে ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অন্য সময়ের চাইতে অনেক বেশি। সকল বয়সীদের মাঝেই ফ্লু’য়ের প্রভাব দেখা দিতে পারে এ সময়ে। জ্বর-জ্বর ভাব, অকারণে ঠাণ্ডা বোধ হওয়া, কাশির সমস্যা, নাক থেকে পানি পড়া, মাথাব্যথা, বমিভাব ও ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দেয় ফ্লুর আগাম সংকেত হিসেবে।

এমন শারীরিক সমস্যাগুলো প্রকাশ পেলে প্রথম থেকেই নিজের প্রতি যত্নশীল হয়ে উঠতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এতে করে ফ্লু’য়ের সমস্যাটিকে যথাসম্ভব কমিয়ে আনা সম্ভব হবে ও ফ্লু দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। সাথে ফ্লু’য়ের জীবাণু ছড়ানো থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে।

হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে

ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার প্রথমেই ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দেয় যা খুব সহজেই ছড়িয়ে পরে। তাই প্রথম থেকেই হাত ভালোভাবে ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে, যেন নিজের কাছ থেকে ফ্লু’র জীবাণু না ছড়ায়। এটাই সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় জীবাণু ছড়ানো প্রতিরোধে, এমনটাই জানাচ্ছে ‘মেডিসিন’ নামক একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত ফিচার।

অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ থেকে বিরত থাকা

সামান্যতম শারীরিক সমস্যা দেখা দিলেই যারা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি ঝুঁকে পড়েন তাদের জন্যে এ পয়েন্টটি বিশেষভাবে মনে রাখা প্রয়োজন। নিউ ইয়র্কের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট নিকেট সনপাল বলছেন, ‘মানুষ বিশ্বাস করে যে তাদের প্রিয় অ্যান্টিবায়োটিক রোগ সারিয়ে তুলবে, কিন্তু আসলে সেটা হয় না। কারণ অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসকে মেরে ফেলে না।’ ফ্লু’র সমস্যা দেখা দিলে অন্তত ৪৮ ঘন্টা স্বাভাবিক ঠাণ্ডার ওষুধ সেবন করার পরামর্শ দেন তিনি। সেই সাথে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে তবেই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে বলেও জানান সনপাল।

ঘুমাতে হবে বেশি

ঘুম মানেই হলো শরীরের বিশ্রাম। যত বেশি ঘুম শরীরকে দেওয়া যাবে, শরীর তত দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সুযোগ পাবে। তাই ফ্লু দেখা দেওয়ার শুরু থেকেই অন্যান্য সময়ের চাইতে বেশি ঘুমাতে হবে। ‘ব্রেইন, বিহাভিয়ার এন্ড ইমিউনিটি’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য মতে, গবেষকেরা ঘুমের সময় ইঁদুরের মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত হওয়া এক ধরনের প্রোটিনের খোঁজ পেয়েছেন, যা ইনফ্লুয়েঞ্জার সমস্যা দ্রুত ভালো হতে কাজ করেছে।

খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার

ফ্লু দেখা দেওয়ার শুরু থেকেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর খাবারে জোর দিতে হবে। বিশেষত খাবার খাওয়ার মতো অবস্থা থাকলে এ বিষয়ে কোন ছাড় দেওয়া উচিত হবে না একেবারেই। টকদই, ফল, সবজি রাখতে হবে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে। সাথে মুরগির স্যুপ পান করতে হবে, কারণ মুরগির স্যুপ প্রদাহ কমাতে কাজ করে, মিউকাস পরিষ্কার করে এবং পেটের সমস্যা কমায়।

পর্যাপ্ত পানি পান

মিউকাসকে পাতলা করার জন্য পানি পান হলো সর্বোৎকৃষ্ট উপায়। এছাড়া ফ্লুজনিত কারণ মুখের ভেতরের অংশ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং পানিশূন্যতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঘনঘন পানি পান করতে হবে অসুস্থতার শুরু থেকে। সাধারণ পানি পানে অরুচি দেখা দিলে ফলের রস, আদা চা, গ্রিন টি প্রভৃতি পান করতে হবে।

বাদ দিতে হবে ক্যাফেইন গ্রহণ

ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় গরম কফি ও চা পানের প্রতি আগ্রহ জন্মালেও ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় থেকে ফ্লু’য়ের সমস্যার সময় যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে। কারণ ক্যাফেইন শরীরকে দ্রুত পানিশূন্য করে দেয়। ফলে ঠাণ্ডার সমস্যায় গরম কিছু পান করতে চাইলে গরম দুধ বা গ্রিন টি পান করতে হবে।

আরএম-১২/১৬/১১ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)