১০টি ভ্যাকসিন যেকোনো বয়সের নারী ও পুরুষের জন্য খুবই জরুরি

১০টি ভ্যাকসিন

সবারই জানা, জন্মের পর থেকে প্রতিটি শিশুর আগাম নিরাপত্তার জন্য শৈশব ও কৈশোরে কিছু ভ্যাকসিন নিতে হয়। তবে এর বাইরেও কিছু ভ্যাকসিন আছে যা প্রাপ্তবয়স্ক হলেও নেয়া জরুরি।

এই ভ্যাকসিন নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। তবে এটি নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের শারীরিক অবস্থার ওপরে। বিশেষ করে পাঁচটি পরিস্থিতে এই ভ্যাকসিন নেয়া আবশ্যক।

পাঁচটি বিশেষ পরিস্থিতি

একজন ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেমের ওপরে অ্যাডাল্ট ভ্যাকসিনেশন নির্ভর করে। কিডনি, লিভার, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস এবং এইচআইভি; এর কোনোটির একটি সমস্যায় ভুগলে কিছু ভ্যাকসিন নিয়ে রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই ১০টি ভ্যাকসিন সম্পর্কে-

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন

অনেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভুগে থাকেন। এই ভ্যাকসিন নেয়া থাকলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম। আর হলেও তার প্রকোপ জোরালো হবে না। ভ্যাকসিনটি বছরে একবার করে নিতে হয়।

এমএমআর ভ্যাকসিন

মিজল, মাম্পস এবং রুবেলা; এই তিনটি রোগ প্রতিরোধের কারণে এমএমআর ভ্যাকসিন দেয়া হয়। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তাদের প্রত্যেকের এই ভ্যাকসিন নেয়া দরকার। এটি সাধারণত একবার নিলেই চলে।

টিটেনাস, ডিপথেরিয়া এবং হোপিং কাফের জন্য

টিডিএপি ভ্যাকসিন বলা হয় এটিকে। ছোটবেলায় না নেয়া থাকলে প্রাপ্তবয়স্কেরা এটি নিতে পারেন। সাধারণত চিকিৎসকেরা ১০ বছর অন্তর একবার করে এই ভ্যাকসিন নেয়ার পরামর্শ দেন। কিছু দেশ আছে যারা হোপিং কাফের ভ্যাকসিন নেয়া না থাকলে ভিসা দেয় না।

সার্ভিকাল ক্যানসার রোধে

এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) মেয়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ভ্যাকসিন। সার্ভিকাল ক্যানসার রোধে এই ভ্যাকসিন নিতে হয়। সরকারি নিয়মে ১২ থেকে ১৩ বছর বয়স থেকেই এটি দেয়া যায়। ১৮ বছর (মেয়েদের বিয়ের বয়সসীমা) পর্যন্ত নেয়া যায়। যৌন সম্পর্ক তৈরি হওয়ার আগে পর্যন্তই মেয়েরা এটি নিতে পারে।

হেপাটাইটিস বি

১০ থেকে ১৫ বছর আগে এই ভ্যাকসিন ছিল না। খুব জরুরি এই ভ্যাকসিন সকলেরই নিয়ে রাখা উচিত। ১৮ থেকে ৭০ বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিই এটি নিতে পারেন। একটি কোর্সের তিন ধাপে নিতে হয় হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন। বয়স্ক মানুষ বা যাদের কিডনি, লিভার, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস এবং এইচআইভির মধ্যে যেকোনো একটি রোগ রয়েছে তাদের এটি জরুরি। তাছাড়া চিকিৎসক, নার্স বা মেডিক্যাল ল্যাবে কর্মরত ব্যক্তিদের এই ভ্যাকসিন নেয়া আবশ্যক।

নিউমোনিয়া রোধে

ডাক্তারি পরিভাষায় এই ভ্যাকসিনের নাম নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন। এটি নেয়া না থাকলে যেকোনো বয়সেই নেয়া যায়। বয়স্ক বা যাদের ইমিউনিটি কম, তাদের জন্য চিকিৎসকেরা বিশেষ করে পরামর্শ দেন এই ভ্যাকসিন নেয়ার।

হিমোফাইলাস ভ্যাকসিন

যাদের স্প্লিন (প্লীহা) কেটে বাদ দিতে হয় তাদের এইচআইবি (হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি) ভ্যাকসিনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সাধারণত থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য এই ভ্যাকসিন আবশ্যক।

মেনিনজাইটিস প্রতিরোধে

প্রাপ্তবয়স্কদের মেনিনগোকক্কাল ভ্যাকসিন খুব জরুরি না হলেও কিডনি, লিভার, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস এবং এইচআইভির মধ্যে একটি থাকলে চিকিৎসকেরা এই ভ্যাকসিন নিয়ে রাখার পরামর্শ দেন।

চিকেনপক্স প্রতিরোধে

ভ্যারিসেলা নামক একটি ভ্যাকসিন দেয়া হয় চিকেনপক্সের জন্য। পুরোপুরি প্রতিরোধ না করা গেলেও, প্রকোপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করে।

বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে

কিছু ভ্যাকসিন রয়েছে, যা আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়, কিন্তু বিদেশে যেতে হলে প্রয়োজন। আফ্রিকার দেশগুলোতে যাওয়ার আগে ইয়েলো ফিভারের জন্য ভ্যাকসিন নিতে হয়। যারা জঙ্গলে কাজ করেন তাদের র্যাবিস ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক। কিছু ক্ষেত্রে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জন্যও ভ্যাকসিন নিতে হয়।

আরএম-২০/১৪/১২ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)