কিডনি রোগীর পেট ব্যথা ও বমি কমায় মিষ্টি নিম পাতা

কিডনি রোগীর

অনেকটা নিম পাতার মতই দেখতে কারি পাতা। এই পাতাটি মিষ্টি নিম, কারি বুশ বারসুঙ্গা ইত্যাদি নামেও পরিচিত। সাধারণত মশলা হিসেবেই রান্নায় কারি পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চীন, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কারি পাতার চাষ করা হয়। ওষুধিগুণে ভরপুর এই পাতায় রয়েছে হাজারো স্বাস্থ্য উপকারিতা-

১. ডায়রিয়া বন্ধে কারি পাতা ম্যাজিকের মত কাজ করে। এতে ডায়রিয়া বিরোধী উপাদান রয়েছে। বিজ্ঞানীরা কিছু ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে এই তথ্যটি নিশ্চিত করেন। ডায়রিয়া দ্রুত সারাতে দিনে দুই বেলা কারি পাতা বেঁটে এক চামচ পরিমাণ খেতে হবে।

২. আয়ুর্বেদ অনুসারে, প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে কারি পাতা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। এছাড়াও পেট ফাঁপা বা বুক জ্বালা-পোড়া ভাব কমাতে কিছু কারি পাতার নির্যাসের সঙ্গে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন খাওয়ার আগের মুহূর্তে এই মিশ্রণটি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

৩. ডায়াবেটিসের সমস্যা বর্তমানে বিশ্বজুড়েই। আপনি জানেন কি? কারি পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। চেন্নাইয়ের মাদ্রাস বিশ্ববিদ্যালেয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের গবেষকরা এমনই তথ্য জানিয়েছে। গবেষণার তথ্য মতে, কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক উপাদান যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৪. প্রস্টেট, লুকেমিয়া কিংবা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে কারি পাতা অত্যন্ত কার্যকরী। জাপানের মেজিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল কেমিস্ট্রি বিভাগের দেয়া এক গবেষণায় জানা যায় এমনই তথ্য। কারি পাতায় থাকা বিভিন্ন উপাদান ক্যান্সারের জীবণু ধ্বংস করতে সক্ষম।

৫. কিডনির বিভিন্ন সমস্যার দাওয়াই কারি পাতা। কিডনি সমস্যার কারণে হওয়া পেট ব্যথা কিংবা বমি কমাতে কারি পাতা বেশ কার্যকরী। এজন্য কারি গাছের শুকনো ছালের গুঁড়ার ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে পান করলেই কিডনি রোগী স্বস্তি পাবে।

৬. চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভুগে থাকি! কারি পাতা চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে যেমন- রুক্ষতা, আগা ফাটা, খুশকি, পাতলা চুল ইত্যাদি। এজন্য নিয়মিত কারি পাতা খাওয়ার বিকল্প নেই। এছাড়াও ভালো ফল পেতে কারি পাতা বেটে বা ব্লেন্ড করে প্যাক বানিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন।

৭. লিভারের সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা অবশ্যই আজ থেকে কারি পাতা খাওয়া শুরু করুন। ‘এশিয়ান জার্নাল অব ফার্মাসিউটিক্যালস অ্যান্ড ক্লিনিক রিসার্চ’র এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, কারি পাতা লিভার সুরক্ষায় কার্যকরী এক উপাদান।
লিভারে জমে থাকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে এই পাতা সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন এ ও সি লিভারকে সুরক্ষিত রাখে।

৮. কারি পাতা ব্লাড কোলেস্টেরলের লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। জার্নাল অব চাইনিজ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, এতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা কোলেস্টেরল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এজন্য কারি পাতা হৃদরোগ সুরক্ষায় বেশ কার্যকরী।

৯. সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই দূর্বলতা বোধ করেন। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীরা এ সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন। এজন্য কারি পাতার নির্যাস, লেবুর রস এবং মধু এক টেবিল চামচ মিশিয়ে সকালে পান করুন। সারাদিন চাঙ্গা থাকবেন। এছাড়াও কয়েকটি কারি পাতা পানিতে ফুটিয়ে চা বানিয়েও খেতে পারেন।

১০. কারি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। শিশুদেরকে প্রতিদিন কারি পাতা খাওয়ালে চোখের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে যাবে।

আরএম-২১/১৬/০১ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)