পেট ফাঁপাভাব কমবে কীভাবে?

পেট ফাঁপাভাব

প্রায়শ পেট ফাঁপাভাব দেখা দেয়? সাথে থাকে পেট থেকে বুক পর্যন্ত জ্বালাপোড়ার সমস্যা? এমন পরিচিত সমস্যাগুলো মূলত দেখা দেয় পাকস্থলীর প্রদাহজনিত কারণে। এই প্রদাহ নানা কারণেই দেখা দিতে পারে। অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়সহ সঠিক খাদ্য উপাদান গ্রহণ না করা।

পেট ফাঁপাভাব দেখা দিলে অস্বস্তিবোধ হওয়ার পাশাপাশি ভুগতেও হয় বেশ লম্বা সময়ের জন্য। সেক্ষেত্রে উপকারী কিছু খাদ্য উপাদান গ্রহণে সমস্যাটি কমে যেতে পারে অল্প সময়ের মাঝেই।

খেতে হবে প্রোবায়োটিক

খেয়াল করে দেখবেন এখনও গ্রামাঞ্চলে বিয়েবাড়িতে পোলাও-রোস্ট খাওয়ার পর শেষ পাতে দই দেওয়া হয়। এমন রীতির পেছনেও রয়েছে পেটের সমস্যাকে দূরে রাখার কৌশল। দই হলো প্রোবায়োটিকের খুব দারুণ একটি খাদ্য উপাদান। যা পাকস্থলীর ভালো ও উপকারী ব্যাকটেরিয়ার মান বৃদ্ধি করে এবং খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হতে সাহায্য করে। এছাড়া বাওয়েল মুভমেন্টের জন্যেও দই খুব প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। যা পেটের সমস্যাকে দ্রুত ভালো করে তুলতে কাজ করে। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক প্রদাহ রোধ করে, ফলে পেট ফাঁপাভাবের সমস্যা দেখা দেয় না।

প্রাধান্য দিন গ্রিন টিতে

উপকারী এই চায়ের অন্যান্য উপকারিতার পাশাপাশি পেটের সমস্যা ও পেট ফাঁপাভাব কমাতেও কাজ করে। গবেষণার তথ্যানুসারে, প্রতি সপ্তাহে শুধুমাত্র এক কাপ গরম গ্রিন টি পানেও গ্যাস্ট্রাইটিস রোগী উপকার পেয়েছেন এবং তার গ্যাসের সমস্যায় লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। তিতকুটে ও বিস্বাদ হওয়ায় অনেকেই গ্রিন টি পান করতে চান না। সেক্ষেত্রে গ্রিন টিয়ের সাথে মধু, লেবুর রস ও আদা মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

উপকারী রসুনের রস

সাধারণ খাবার তৈরিতেও রসুন ব্যবহার করা হয়। সাধারণ ও পরিচিত এই খাদ্য উপাদানটিই পেটের সমস্যা ও পেট ফাঁপাভাবকে দূরে রাখতে কাজ করবে। রসুনের রস পাকস্থলী থেকে H.Pylori ব্যাকটেরিয়াকে দূর করে। মূলত এই ব্যাকটেরিয়াটি পাকস্থলীর প্রদাহ তৈরির জন্য দায়ী।

রসুনের রস থেকে পুরোপুরি উপকারিতা পাওয়ার জন্য কয়েক কোয়া রসুন থেঁতলে এর রস বের করে এই রস পানিতে মিশিয়ে পান করতে হবে।

খেতে হবে আদা

আদার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ধর্ম পেটের সমস্যা ও পেট ফাঁপাভাবকে দূর করার জন্য উপকারী। পাশাপাশি পেটের প্রদাহকে কমাতেও কাজ করে আদার রস। উপকার পাওয়ার জন্য আদা চিবিয়ে তার রস খাওয়া যেতে পারে। তবে আদার ঝাঁজে সমস্যা হলে পানিতে ফুটিয়ে আদা চা তৈরি করে পান করতে হবে।

কিছুক্ষণ পর অল্প পরিমাণ খাবার

লম্বা সময় পরপর অনেক বেশি পরিমাণ খাবার একসাথে খাওয়ার ফলেও অনেক সময়স প্রদাহ তৈরি হয় এবং এই অভ্যাসটি পেট ফাঁপাভাব তৈরির জন্য দায়ী। বিশেষত যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই অভ্যাসটি বেশি ক্ষতিকর।

এ কারণে প্রতি দুই ঘন্টা পরপর অল্প পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এমন খাদ্য উপাদান নির্বাচন করতে হবে, যা পেটের জন্য উপকারি এবং ক্ষুধাভাব দূর করতে কাজ করবে।

আরএম-১৯/১৭/০১ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)