দশ কারণে মিষ্টি কুমড়া খাওয়া খুব জরুরি

দশ কারণে

মিষ্টি কুমড়া অনেকেরই পছন্দের একটি সবজি। যদি কেউ এই সবজিটি পছন্দ নাও করেন, তারপরও এর উপকারিতা জানলে না খেয়ে পারবেন না। অবাক করা পুষ্টিগুণ রয়েছে মিষ্টি কুমড়াতে। তাই যদি কেউ এই সবজিটি না খেয়ে থাকেন তবে অনেক স্বাস্থ্যোপকারিতা থেকে বঞ্চিত হবেন।

ভিটামিন এ, বি-কমপেস্নক্স, সি এবং ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস, কপার, ক্যারটিনয়েড এবং অন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের ধারক। এছাড়াও বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ এই সবজিটি আমাদের দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধক কোষ গঠন করে। চলুন জেনে নেয়া যাক এর উপকারিতাগুলো-

দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে

দেহের অতিরিক্ত ফ্রি র্যাডিকালগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করতে পারে, যা হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। কুমড়া আলফা-ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন এবং বিটা-ক্রিপ্টোক্সানথিন সমৃদ্ধ একটি সবজি। এতে থাকা এসব উপাদান সমস্ত ফ্রি র্যাডিকেলগুলো আলাদা করে এবং ক্ষতিকারক কোষগুলো ধংস করে।

চোখের যত্নে

এককাপ পরিমাণ রান্না করা মিষ্টি কুমড়া আমাদের চোখের সুস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অন্যান্য খাবার থেকে ১০০ গুণ বেশি কাজ করে। বিটাক্যারোটিন ও আলফা-ক্যারোটিনের মতো ক্যারটিনয়েডসমূহ চোখের ছানিপড়া রোধসহ চোখের রেটিনা কোষ রক্ষা করে। তাই চোখকে সচল ও সুস্থ রাখতে আপনার খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া যোগ করুন।

ক্যান্সার দূরে রাখে

মিষ্টি কুমড়ায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যেটা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল কম রাখতেও ভূমিকা পালন করে। আর্টারির দেয়ালে চর্বির স্তর জমতে বাধা প্রদান করে। ফলে মিষ্টি কুমড়া নিয়মিত খেলে হৃদরোগও প্রতিরোধ করা যায়।

ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে

কুমড়ার বীজ রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাসে অনেক সহায়তা করে। কুমড়ার বীজে উচ্চ ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। তাই প্রতিদিন কুমড়ার বীজ খাওয়ার অভ্যাস করুন।

চুল ও ত্বক ভালো রাখে

একটি মিষ্টি কুমড়াতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে। সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়ায় থাকা ভিটামিন এ, সি চুল ও ত্বক ভালো রাখে। তাই চকচকে উজ্জ্বল চুল ও সুন্দর ত্বকের জন্য নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেতে পারেন।

রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে

মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে বিটাক্যারোটিন। বিটাক্যারোটিন এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরের ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধে মিষ্টি কুমড়া ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন দূষণ, স্ট্রেস ও খাবারে যেসব কেমিক্যাল ও ক্ষতিকর উপাদান থাকে সেগুলোর কারণে ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজ হতে শুরু করে। ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজের ফলে শরীরের ভালো কোষগুলো নষ্ট হতে শুরু করে এবং খারাপ কোষের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। সবুজ, কমলা, হলুদ রঙের সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণে থাকে। তাই মিষ্টি কুমড়া ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করতে পারে।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য

মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ গর্ভবতী মায়েরা তাদের অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্যর জন্য নির্দ্বিধায় খেতে পারেন। মিষ্টি কুমড়া গর্ভবতী মায়েদের রক্তস্বল্পতা রোধ করে অকাল প্রসবের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

ওজন কমাতে

কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার মিষ্টি কুমড়া ওজন কমাতে একটি উপযুক্ত খাবার। এছাড়া মিষ্টি কুমড়ার উচ্চ পটাসিয়াম কন্টেন্টও খুব সুন্দরভাবে আপনার শরীরের বাড়তি মেদটুকু সযত্নে ঝরিয়ে দিতে সাহায্য করে। যারা তাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে বিব্রত তারা নিঃসন্দেহে কুমড়া খেতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় তা সহজেই হজম করতে সাহায্য করে। হজমশক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মিষ্টি কুমড়ার জুড়ি নেই।

বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না

মিষ্টি কুমড়াতে আছে প্রচুর পরিমাণে জিংক ও আলফা হাইড্রোক্সাইড। জিংক ইমিউনিটি সিস্টেম ভালো রাখে ও অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়া বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করতেও মিষ্টি কুমড়া সাহায্য করে।

আরএম-২২/২৮/০২ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)