করোনা থেকে ডায়াবেটিস রোগীরা বাঁচবেন যেভাবে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের বেশির ভাগই দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ ফুসফুসের অসুখ ইত্যাদি সমস্যায় ভুগছিলেন। বিশেষজ্ঞদের মতেও, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের তথ্য অনুসারে পৃথিবীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২২ মিলিয়নেরও বেশি। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে সারা পৃথিবীতে ২৩ কোটি ২০ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছেন।

নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে বেশি ভর্তি হয়েছেন ডায়াবেটিস, ফুসফুস এবং হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগীরা। এমনকি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা পাঁচজনের মধ্যে অন্তত একজন এসব দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রসমূহের সর্বশেষ প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে এমন তথ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’র রিপোর্ট অনুসারে, করোনায় আক্রান্ত ৭ হাজার ১৬২ জনের মধ্যে ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশই কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগছিলেন।

আর রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা ৭৮ শতাংশ করোনা রোগীর মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন ৩২ শতাংশ, হৃদরোগে ২৯ শতাংশ, ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগে ২১ শতাংশ আর ১২ শতাংশেরও বেশি রোগী কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অন্যদিকে মাত্র ৯ শতাংশ রোগীর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত ছিল।

কেন ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা বেশি ঝুঁকিতে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে যে কোনো সংক্রমণের আশঙ্কা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এমনকি করোনার ঝুঁকিও।

এ সময় যা করা উচিত-

১. দিনে অন্তত ৫ থেকে ৬ বার, কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। স্যানিটাইজারের চেয়ে সাবান উত্তম।

২. রান্না, পরিবেশন ও খাওয়ার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। নিজের ব্যবহৃত বাসনপত্র এমনকি কাপড়ও আলাদা করতে হবে।

৩. পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন- শাক, সবজি, ফল, মুরগির মাংস, মাছ, ডিম, ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেন বা মাল্টি গ্রেন আটা ইত্যাদি খেতে হবে।

৪. এ সময় হাতের কাছে মিষ্টিজাতীয় খাবার রাখতেও ভুলবেন না যেন! যদি হঠাৎ ডায়াবেটিস খুব কমে যায়, তখন কাজে আসবে।

৫. প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইনসুলিন পর্যাপ্ত কিনে রাখুন। মেশিনে সুগার মাপার স্ট্রিপও কিনে রাখুন। এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।