উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে তেল রফতানি বন্ধের হুমকি ইরানের

ফের অশান্তির ঘনঘটা পারস্য উপসাগরে। বাড়ল ইরান আর আমেরিকার সংঘাতের তীব্রতা। ইরানের তেল রফতানি বন্ধ করতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে ছেড়ে কথা বলবে না তেহরান।সেক্ষেত্রে পারস্য উপসাগরীয় এলাকা থেকে সমস্ত তেল রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেহুঁশিয়ারি দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইরানকে এক ঘরে করার মার্কিন কৌশল বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইরান থেকে যাতে কোনও দেশ তেল না কেনে, সেই জন্য বিশ্ব জুড়েই তৎপরতা বাড়াচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকার ঘোষিত লক্ষ্য, ইরান যাতে কোনও দেশকে এক বিন্দুও তেল রফতানি না করতে পারে।

সেক্ষেত্রে বিশ্ব জুড়ে তেলের জন্য ইরানের উপর নির্ভরতা কমবে। পাশাপাশি, তেল নির্ভর এই দেশটির অর্থনীতিও ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই লক্ষ্যেই শুধু ইরান নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যারা ইরান থেকে তেল কেনে, সেই সব দেশগুলির ওপরও চাপ বাড়াচ্ছে ওয়াশিংটন।

আমেরিকার এই চাপের মুখে এবার পাল্টা হুমকির রাস্তায় হাঁটল ইরান। মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি যা বললেন, তার প্রভাব পড়বে পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলেই। রৌহানির হুঁশিয়ারি, পারস্য উপসাগরে ইরানের তৈলবাহী জাহাজের চলাচল বন্ধ হলে অন্য কোনও জাহাজকেই এই উপসাগর দিয়ে যেতে দেওয়া হবে না।’’

রৌহানির মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ কারণ, সে ক্ষেত্রে এই অঞ্চল দিয়ে সমস্ত তেল রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে। সারা পৃথিবীর একটা বড় অংশ তেলের জন্য পারস্য উপসাগর তীরবর্তী দেশ গুলির ওপর নির্ভরশীল। ইরাক, কুয়েত, বাহরিন, ওমান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে সারা পৃথিবীতে তেল যাওয়ার প্রধান রাস্তা এই পারস্য উপসাগরই। অর্থাৎ, ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে পারস্য উপসাগরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিরীক্ষার বিষয়টিকেই ঢাল করে বিশ্ব জুড়ে নিষেধাজ্ঞার চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা। ইরানকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করাই লক্ষ্য আমেরিকার। যদিও সেই উদ্দেশ্য কোনও ভাবেই সফল হবে না বলে ইরানি প্রেসিডেন্টের সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইশাক জাহাঙ্গিরি-ও।

তাঁর দাবি, ‘‘আমেরিকা বার বার বলে চলেছে এই নিষেধাজ্ঞা ইরান সরকারকে লক্ষ্য করে। দেশের সাধারণ মানুষের ওপর এর কোনও প্রভাব পড়বে না। কিন্তু আমেরিকার এই কথা ডাহা মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ এই নিষেধাজ্ঞা চালু হলে সেই প্রভাব পড়বে দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। যার থেকে বাদ যাবে না মহিলা, শিশু এবং বয়স্করাও।’’

এসএইচ-২৩/০৪/১২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক, তথ্য সূত্র : রয়টার্স)