বিজয় মালিয়াকে ভারতে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ

ভারতের বিখ্যাত মদ ব্যবসায়ী ও প্রায় ৯০০০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি মামলায় অভিযুক্ত বিজয় মালিয়াকে যুক্তরাজ্যে থেকে বহিষ্কার করে ভারতে জালিয়াতির মামলা লড়তে পাঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কানাডার একটি আদালত। মঙ্গলবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে এ আদেশ দেয়া হয়।

তবে নিম্ন আদালতের এই সিদ্ধান্তকে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন মালিয়া। সেক্ষেত্রে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে তাঁকে।

এর আগে, কিংফিশার এয়ারলাইনসেকে ‘বাঁচানো’র তাগিদে ভারতের একটি ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের ঋণ নিয়েছিলেন এই আলোচিত ব্যবসায়ী।

পরে সেই টাকা পরিশোধ না করেই খেলাপি ঋণের অভিযোগ মাথায় নিয়ে ২০১৬ সালের মার্চে ভারত ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে গিয়েছিলেন তিনি। ঋণ খেলাপির দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলার বিচারকাজ চালানোর জন্য তাকে দেশে ফেরত চাইছিল ভারত সরকার। আর সেই অপরিশোধিত ঋণের জন্যই লন্ডনের আদালত তাঁকে ভারতের হাতে সমর্পণের রুল জারি করেন।

‘সুসময়ের রাজা’ খ্যাত ৬২ বছর বয়সী এই মানুষটি তাঁর বেহিসেবি জীবনাচারের জন্য খ্যাত। মালিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে তিনি ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছেন এবং তা এখনও শোধ করেননি। ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আইডিবিআই ব্যাংক থেকে এই অর্থ ঋণ নেন বিজয় মাল্য।

ভারত কর্তৃপক্ষ বলছেন, এই অর্থ পরিশোধের কোনো ইচ্ছেই যেন নেই এই মানুষটির এবং তাঁকে বারণ করা সত্ত্বেও তিনি ‘বেজায়গা’য় অর্থ লগ্নি করেছেন।

তবে এমন অভিযোগ গায়ে মাখেননি মালিয়া। কিংফিশার বিয়ার এর মালিক ও ফরমুলা ওয়ান ইন্ডিয়া টিমের এই সহ-স্বত্বাধিকারী জানান, তিনি ভুল কিছু করেননি।

তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, মামলাটি এখন রাজনৈতিক হয়ে গেছে সুতরাং তিনি ভারতে এর ন্যায্য বিচার পাবেন না।

ইংল্যান্ডের চিফ ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক এমা আরবুথনট বলেন, ঋণটি উত্তোলনের জন্য ব্যাংককে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। এবং তিনি এ বিষয়ে রুল জারি করেন। তিনি বলেন, আদালত মনে করছে বিষয়টিতে চক্রান্তের গন্ধ আছে এবং বিষয়টি হয়তো-বা মানি লন্ডারিং সম্পর্কিত।

পরে বিচারক এমা আরবুথনট আর্থিক এই কেলেঙ্কারির বিষয়ে অনেক আলোচনার পর বিজয় মাল্যকে সতর্ক করে বলেন, আপনি এই বিষয়ে একটি বড় কিছুর সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন।

আদালতের বাইরে বিজয় মালিয়া বলেন, বিচারক বলেছেন এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং আমি এখানে অর্থাৎ ইংল্যান্ডে থেকেই মামলাটি লড়ব।

ভারত সরকারের পক্ষের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, তাদের মামলার ফোকাস ছিল মাল্যর এতদিনের কর্মকাণ্ড এবং কীভাবে তিনি বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে সুযোগ নিয়েছিলেন।

এসএইচ-১৪/১১/১২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)