হিন্দুত্বের চাপে ২০ কোটি মুসলিম কার্যত ২য় শ্রেণির নাগরিক

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মির থেকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় শীর্ষ স্থান দখল করে নজরে এসেছিলেন শাহ ফয়সাল। ‘কাশ্মিরিদের হত্যা’ ও ‘হিন্দুত্ববাদীদের হাতে মুসলিমদের কোণঠাসা হওয়ার’ প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সিভিল সার্ভিস থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।

উপত্যকার রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দেবেন ফয়সাল। তাকে রাজনীতিতে স্বাগত জানিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স’র প্রধান ওমর আবদুল্লাহ। কুপওয়ারার সোগাম লোলাব এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ফিরেছেন। চাকরিতে পোস্টিংয়ের অপেক্ষায় ছিলেন এই তরুণ।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্টের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল জম্মু-কাশ্মির সরকার। ভারতে ধর্ষণের একাধিক ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি টুইটারে লেখেন, ‘জনসংখ্যা, পিতৃতন্ত্র, অশিক্ষা, মদ, পর্নগ্রাফি, প্রযুক্তি ও অরাজকতার ফলে দেশ রেপিস্তান হয়েছে।’

পরে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৫-এ ধারাকে ভারত ও ওই রাজ্যের মধ্যে ‘বিয়ের দলিল’র সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার টুইটারে এক টুইটে ফয়সাল লিখেছেন, ‘কাশ্মিরিদের হত্যা বন্ধের কোনো সদিচ্ছা নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার ওপরও আঘাত হানার চেষ্টা হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের চাপে দেশের ২০ কোটি মুসলিম কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে সিভিল সার্ভিস থেকে ইস্তফা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

নরেন্দ্র মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে ফয়সাল বলেন, ‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সিবিআই, এনআইএ-র মতো প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ এ দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে নষ্ট করে দিতে পারে। আমি ফের জানাতে চাই, দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে বেশি দিন চুপ করিয়ে রাখা যাবে না।’

এসব কথার পরই কাশ্মিরের এই তরুণের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। ফয়সালের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আমলাতন্ত্রের ক্ষতি হলেও রাজনীতির লাভ হলো। রাজনীতিতে স্বাগত।’

এসএইচ-১৫/১০/১৯ (অান্তর্জাতিক ডেস্ক, তথ্য সূত্র : এনডিটিভি)