এবার আশ্রয়ের আকুতি আমিরাতি নারীর (ভিডিও)

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক নারী পরিবার ছেড়ে বলকান রাষ্ট্র মেসিডোনিয়ায় পালিয়ে গেছেন। দেশটিতে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষের কাছে আশ্রয়ের আবেদন করেন তিনি। কিন্তু যাচাই-বাছাই শেষে আমিরাতি ওই নারীর আশ্রয়ের আবেদন বাতিল করে দিয়েছে মেসিডোনিয়া সরকার।

এ ঘটনার পর আশ্রয় পেতে সহায়তা চেয়ে আকুতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ভিডিও টুইট করেছেন তিনি। ওই নারীর নাম হিন্দ মোহাম্মদ আলবোলুকি (৪২)। ভিডিওতে তিনি বলেন, স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে হুমকি দেন। হুমকি পাওয়ার পর তিনি আবু ধাবি থেকে পালিয়ে মেসিডোনিয়ায় যান।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি মেসিডোনিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই নারীর আশ্রয় পাওয়ার আবেদন বাতিল করে দেয়। মন্ত্রণালয় বলছে, আমিরাতি ওই নারীকে পারিবারিক, জাতিগত, ধর্ম অথবা রাজনৈতিক কোনো ধরনের নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মেসিডোনিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তবে স্বেচ্ছায় মেসিডোনিয়া ত্যাগ করার জন্য আলবোলুকিকে ১৫ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় মেসিডোনিয়া থেকে চলে যেতে হবে তাকে। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তিনি মেসিডোনিয়ার ইমিগ্রেশন আটক কেন্দ্রে থাকবেন। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আটকা আছেন তিনি।

আমিরাতি ওই নারীর বন্ধু নিনাদ দিমিত্রোভ মেসিডোনিয়ার কোচানি শহরে বসবাস করেন। ইমিগ্রেশন কেন্দ্রে আটকা থাকায় আলবোলুকির টুইটার অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করছেন নিনাদ। তিনি বলেন, আলবোলুকির সঙ্গে তার স্বাক্ষাৎ হয়েছিল এক প্রমোদ তরীতে, তখন থেকেই তাদের মাঝে যোগাযোগ ছিল।

গত বছরের ২ অক্টোবর টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে আমিরাত থেকে পালিয়ে যান আলবোলুকি। নিনাদ বলেন, বাড়ি থেকে পালানোর সময় পায়ের জুতাও রেখে এসেছিলেন তিনি। পরে পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনে আত্মগোপন করেন তিনি।

ট্যাক্সিতে করে শারজাহ শহরে এক বন্ধুর বাসায় যান তিনি। নিনাদ বলেন, পরে স্থলপথে বাহরাইনে পৌঁছান আলবোলুকি।

গত ৪ অক্টোবর তুরস্ক হয়ে সার্বিয়ায় যান তিনি। সেখান থেকে মেসিডোনিয়ায় প্রবেশ করেন। দুই সপ্তাহ পরে দেশটিতে আশ্রয়ের আবেদন করেন তিনি।

আমিরাত থেকে পালিয়ে অন্যদেশে গিয়ে আশ্রয় চাওয়ার এই ঘটনা প্রথম নয়। গত বছর আমিরাতের রাজপরিবারের সদস্য ও দুবাইয়ের শাসকের মেয়ে লতিফা বিনতে মোহাম্মদ আল মাকতুম দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

সেই সময় তার এই ঘটনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে আলোড়ন তৈরি করে। দুবাই রাজপরিবারের ওই নারী সদস্য বলেছিলেন, তিন বছর ধরে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করছে পরিবারের সদস্যরা।

চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝের দিকে রক্ষণশীল সৌদি আরবের এক তরুণী পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকির মুখে ব্যাঙ্ককে পালিয়ে যান। পরে সেখান থেকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় কানাডায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পান তিনি।

সৌদি আরবের কট্টর সমাজ-ব্যবস্থার কারণে অনেক নারীই পরিবার ছেড়ে পালিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন।

এসএইচ-১৫/১২/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)