মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী তালিকায় চায় ভারত

পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও এর প্রধান মাসুদ আজহার এখনও সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত হয়নি। ভারত যখন তাকে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা করছে, ঠিক সেই সময় সৌদি-পাকিস্তানের এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিয়ে অনিচ্ছার পরোক্ষ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাউকে তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা যথাযথ নয়। ২০০১ সালে জাতিসংঘ জইশ-ই-মোহাম্মদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সে সময়ই সংগঠনের প্রধান মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। তবে চীনের ভেটোর কারণে সেই প্রস্তাব পাস করা যায়নি। ২০১৬ সালে পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় মাসুদ আজহারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ভারতের পক্ষ থেকে আবারও তার প্রতি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সেবারও চীনের কারণে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন বলছে, এখনও জইশ-এ-মোহাম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করতে মরিয়া দিল্লি। সম্প্রতি কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে আধা সামরিক বাহিনীর ওপর জয়েশ ই মোহাম্মদের হামলার পর পাকিস্তানকে ‘একঘরে’ করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরালো করেছে দিল্লি। এমন সময় যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের পাকিস্তান সফরকালে রিয়াদ-ইসলামাবাদ যৌথ বিবৃতিতে এ নিয়ে সৌদি আরবের অনিচ্ছার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। কাউকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি রাজনীতিমুক্ত হওয়া উচিত।

অবশ্য পাকিস্তান ও সৌদি আরবের যৌথ বিবৃতির আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব(ইকোনমিক রিলেশনস) টি এস তিরুমূর্তি বলেছিলেন, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় যে হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। সন্ত্রাস মোকাবিলা ও নিরাপত্তায় সৌদি আরব যেভাবে পাশে থেকেছে তা প্রশংসনীয়। ২০১৬ সালে সৌদি আরবে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় সন্ত্রাস দমন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল। সন্ত্রাস দমনে ভারতের সঙ্গেই কাজ করতে চায় ওরা।’

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ভাষ্য, তিরুমূর্তির এ মন্তব্যের কোনও প্রতিফলনই দেখা যায়নি পাকিস্তান-সৌদি আরবের যৌথ বিবৃতিতে। উল্টো সন্ত্রাস দমন নিয়ে পাকিস্তান সরকারের সাফল্যের গুণগান করা হয়েছে এতে।

বৃহস্পতিবার পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স’র গাড়ি বহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে বহরের ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি বাস সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রাণ হারায় বাহিনীর অন্তত ৪৪ সদস্য। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ।

এসএইচ-২১/১৯/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)