মসজিদে হামলায় দু’ বাংলাদেশিসহ নিহত ৪৯ (ভিডিও)

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলিতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। মসজিদে জুমার নামাজের সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে। ২৮ বছর বয়সী হামলাকারী যুবক একজন অস্ট্রেলীয়। নিউজিল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ জানিয়েছেন হামলায় ৪৯ জন মারা গেছে। ২০ জনেরও বেশি গুরুতর আহত।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশির একজন হলেন কৃষিবিদ ড. আবদুস সামাদ। তিনি ক্রাইস্টচার্চের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। এর আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তার স্ত্রীরও সন্ধান পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের কনসাল শফিউর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন। মিসেস হোসনে আরা ছবি নামে আরেক বাংলাদেশির নিহত হওয়ার খবরও দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া আরো আট বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান। এছাড়া তিন-চার বাংলাদেশি নিখোঁজ আছেন বলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।

হামলার সময় বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল মসজিদটিতে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা নিরাপদে সরে আসতে সক্ষম হয়েছেন। নিউজিল্যান্ড সফরে যেখানে তাদের শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা, তার কাছেই মসজিদটির অবস্থান।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিকের ক্রীড়া প্রতিবেদক। তিনি বলেন, ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে যখন তারা উপস্থিত হন, তখন সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চলছিল। সতর্ক করার পরেই হতবিহ্বল খেলোয়াড়রা বাসের ভেতর চলে যান এবং তারা ফ্লোরে শুয়ে পড়েন।

দেশটির সাউথ আইল্যান্ডে আল নূর মসজিদে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে অন্তত ৫০টি গুলি করা হয়েছে।

সামাজিকমাধ্যমে মসজিদের ভেতর থেকে গোলাগুলির লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করা হয়। স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে যখন এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, তখন শুক্রবারের জুমার নামাজ চলছিল।

পার্শ্ববর্তী লিনউড মসজিদেও হামলায় নিহতের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হামলার ঘটনাকে সংকটময় উল্লেখ করে স্থানীয়দের ঘরের ভেতর থাকতে অনুরোধ করেছে পুলিশ।

মসজিদের ভেতরে যখন এক ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি করছে, যখন মুসল্লিরা সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হলেও তিনিই বন্দুকধারী কিনা- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আল নূর মসজিদে যখন এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটছে, তখন বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল মসজিদের ভেতরেই ছিল।

দিনটিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন আখ্যায়িত করে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আরডান বলেন, হতাহতদের পরিবারের প্রতি আমিসহ নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের সমবেদনা রয়েছে।

গোলাগুলির সময় এক ব্যক্তি পালিয়ে যেতে যেতে বলছেন, ফুটপাতে আমার স্ত্রীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। আমার স্ত্রী নিহত হয়েছে। এ সময় তিনি চিৎকার করে কান্না করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আহমাদ আল মাহমুদ বলেন, হামলাকারীদের একজন ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। উজ্জ্বল চুলের ওই যুবক হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরেছিলেন।

মসজিদের কয়েকশ লোক যখন নামাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তখনই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। মসজিদটিতে ৩০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন।

এসএইচ-০৪/১৫/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)