জাতীয় দলের মর্যাদা হারাতে বসেছেন ভারতের বামপন্থীরা!

সর্বভারতীয় দলের তকমা হারাতে বসেছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআইএম)। গত লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশে দুই শতাংশ ভোটও পায়নি পুরোনো এই বামপন্থী রাজনৈতিক দলটি।

জাতীয় দল হিসেবে পরিচিতির বদলে এখন মাত্র চারটি রাজ্যে নিজেদের সলতে কোনোভাবে জ্বালিয়ে রেখেছে এক দশক আগের সংসদীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখা দলটি। তবে যত দিন যাচ্ছে ঐহিত্যবাহী এই দলটিকে মানুষ ততই দূরে ঢেলে দিচ্ছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে টানা প্রায় সাড়ে তিন দশক ক্ষমতায় ছিল সিপিআইএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার। সাধারণ মানুষের কাছে দলটি ‘সিপিএম’ হিসেবেই পরিচিত। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে ক্ষমতা হারায় বামপন্থীরা। তারপর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে বাম-শিবিরের রক্তক্ষরণ আটকানো যাচ্ছিল না।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যই ছিল বামপন্থীদের ঘাঁটি। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে দলটির কোনো প্রার্থীই মানুষের রায় পায়নি। নরেন্দ্র মোদির বিজেপির উত্থানে দলের নেতারা ৪২টি আসনে কোনো প্রতিদ্ব›িদ্বতাই গড়ে তুলতে পারেননি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে লোকসভায় দুটি আসন জিতেছিল সিপিএম। এবার জনগণ তাদের একেবারে শূন্য হাতে ফিরিয়েছে। অপরদিকে গতবার বিজেপির আসন ছিল দুটি, এবার তারা ১৮টি আসনে জিতেছে।

বামপন্থীদের আরেকটি ঘাঁটি ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ২০১৮ সালে সেই রাজ্যও বিজেপির হাতে চলে যায়। এক বছরের ব্যবধানে লোকসভা নির্বাচনে মানুষ সেখানে বিজেপিকেই নির্বাচিত করেছে।

ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় বা রাজ্য দলের স্বীকৃতি দেয় ভারতের নির্বাচন কমিশন। তিনটি মাপকাঠিতে এটি নির্ধারণ করা হয়। কমপক্ষে তিনটি রাজ্য থেকে লোকসভায় ১১টি আসন পেতে হবে। দ্বিতীয়ত চারটি রাজ্যে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। তৃতীয়ত চারটি লোকসভা আসনে জয় অথবা চার রাজ্যে রাজ্য দলের মর্যাদা থাকতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের একমাত্র ভরসা এখন তামিলনাড়– রাজ্য। সেখানে ৩৯টি আসনের মধ্যে দুটি আসন পেয়েছে সিপিএম। পরিসংখ্যান বলছে,তামিলনাড়–তে ১.২৮ আসন পেয়েছে সিপিএম। আর এই পরিসংখ্যানের জোরেই আপাতত আশায় বুক বাঁধছেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, বিমান বসুরা।

এসএইচ-২৯/০৮/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)