ভারতে মুসলমানদের জোরপূর্বক ‘জয় শ্রীরাম’ কিংবা ‘জয় হনুমানের’ মতো ধর্মীয় স্লোগান জপ করানোর ঘটনা বেড়েই চলছে। সম্প্রতি ঝাড়খন্ডে এক মুসলিম তরুণকে জোরপূর্বক এসব স্লোগান বলানোর পর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এবার জানা গেছে, কলকাতায় এক মাদরাসা শিক্ষক ‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় তাকে ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতে সরকার গঠন করেছে মোদির কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। মোদির দল ক্ষমতায় আসার পর মুসলিমদের দিয়ে এসব হিন্দু ধর্মীয় স্লোগান বলানোর ঘটনা বেড়েছে।
কলকাতার একটি পত্রিকার এক অনলাইন প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে। ঘটনার শিকার ওই মাদরাসা শিক্ষকের নাম শাহরুফ হালদার। ছুটি শেষে তিনি কর্মস্থলে ফেরার পথে চলন্ত ট্রেনে অন্য যাত্রীদের দ্বারা এমন হেনস্থার শিকার হন।
আনন্দবাজার বলছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ জুন। সেদিন ওই মাদরাসা শিক্ষক উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা থেকে ট্রেনে করে কলকাতা ফিরছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় বাড়ির পাশের রেল স্টেশন থেকে শিয়ালদাহমুখী ট্রেনে ওঠেছিলেন।
মঙ্গলবার ওই যুবক কলকাতা পুলিশকে জানিয়েছেন, সেদিন ট্রেনে উঠেছিলেন হিন্দু সংহতি নামের একটি সংগঠনের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। তাদের কয়েকজন বিনা কারণে তাকে উদ্দেশ্য বাজে মন্তব্য করা শুরু করে। প্রতিবাদ করলে মারধর করার পর ১০-১৫ জন তাকে ঘিরে ধরে জয় শ্রী রাম স্লোগান দেয়ার জন্য জোর করতে থাকে।
লাঞ্চিত ওই শিক্ষক বলেন, ‘আমি স্লোগান দিতে না চাইলে তারা আমাকে আরও বেশি করে মারধর শুরু করে। একবার পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরে আমাকে ওরা ট্রেনের কামরাতে আটক করে রাখে। এক পর্যায়ে ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রেলওয়ে পুলিশ ইতোমধ্যেই ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ বলছে, ঘটনার নেপথ্যে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে অস্বীকৃতি জানানো নাকি নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তদন্ত কর্মকর্তারা।
এদিকে চলতি সপ্তাহেই ঝাড়খণ্ডে সামস তেবরেজ নামে ২৪ বছর বয়সী এক মুসলিম যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করেছে উগ্রপন্থীরা। এ সময় তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করা হয়। মারধরের পর পুলিশে হেফাজতে চারদিন বিনা চিকিৎসায় থাকার পর মৃত্যু হয় তার।
এসএইচ-২৯/২৫/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)