বাংলাদেশের মুম্বাই ও গুজরাট সমুদ্র বন্দর ব্যবহার খতিয়ে দেখছে দিল্লি

আঞ্চলিক বাণিজ্যের পরিবহণ কেন্দ্রে নিজেদের সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে দিল্লি। যার আরেক কারণ, চীনা প্রভাব মোকাবেলা। এই কারণেই বাংলাদেশকে নিজেদের দুটি পশ্চিমাঞ্চলীয় সমুদ্রবন্দর বৈদেশিক বাণিজ্যের হাব হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়া যায় কিনা, তা নিয়ে ভাবছে নয়া দিল্লি।

বন্দর দুটি হলো মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহেরু (জেএনপিটি) বন্দর এবং গুজরাটের কুচ উপসাগরের তীরের মুন্দ্রা বন্দর। বাংলাদেশ থেকে ২০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বন্দর দুটির মাঝে যে কোন একটি বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে। দুটি বন্দরেই মাদার ভ্যাসেল বা সুবিশাল আকৃতির প্রধান পণ্য পরিবহণকারী জাহাজ ভিড়তে পারে। ভারত চায় বন্দরেই বাংলাদেশ তার আমদানি-রপ্তানি পণ্য মাদার ভ্যাসেল থেকে লোড বা আনলোড করুক।

এতে দেশটির বন্দর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আদায় এবং পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা বিপুল পরিমাণ মুনাফা করে যেমন লাভবান হবে। তেমনি বাংলাদেশের এক ধরনের নির্ভরতা তৈরি হবে, যা চীনের প্রভাব মোকাবেলায় ভারতের জন্য আরো সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করবে। ভারত দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পরিমন্ডলে চীনের ক্রমবৃদ্ধিমান প্রভাবের মাঝেই এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছে। ইতিমধ্যেই, স্থল বেষ্টিত দেশ নেপাল নিজ ভূখন্ড থেকে ৪ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চীনের বন্দরগুলির মাধ্যমে নিজের বৈদেশিক বাণিজ্য স¤পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। উদ্যোগটি কয়েক শো’ কোটি ডলারের।

তবে ভারতের দাবি, তাদের বন্দর ব্যবহার করলে বাংলাদেশের কোন অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবেনা। কারণ দুই দেশের মাঝে ইতিমধ্যেই বেশকিছু রেলপথ সংযোগ চালু রয়েছে। যা ব্যবহার করে বন্দরে খালাস করা পণ্য বাংলাদেশে রেলপথে সরবরাহ করা হবে। দুই দেশের বৈদেশিক বানিজ্য বৃদ্ধিতে ঢাকা পদ্মা সেতু নির্মাণ করছে। সেতুটির রেল পরিবহণ সক্ষমতা থাকায় রেলপথে পণ্য বাংলাদেশের সকল অঞ্চলে সহজে পরিবহণ করা সম্ভব হবে। বর্তমানে এই প্রস্তাবটি প্রাথমিক বিবেচনার অধীনে রয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ তার বৈদেশিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মাদার ভেসেল ব্যবহার করার জন্যে শ্রীলংকার কল্মবো বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। চট্টগ্রাম বন্দরের গভীরতা যথেষ্ট না থাকার কারণেই এই নির্ভরতা। চট্টগ্রাম থেকে কলম্বো বন্দরে ছোট জাহাজে করে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য মাদার ভেসেলে লোড করা হয়। এছাড়াও, সিঙ্গাপুরের কালাং বন্দর মাদার ভ্যাসেল এক্সেসের জন্য ব্যবহার করে বাংলাদেশ। দুটি বানিজ্যপথেই নাকি বাংলাদেশের সময় ও অর্থ খরচ হচ্ছে, যার তুলনায় ভারতের সমুদ্র পথ ব্যবহারে বাংলাদেশ অধিক উপকৃত হবে, দাবি দেশটির গণমাধ্যমের।

এসএইচ-২১/২০/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)