তসলিমা নাসরিনের ভিসার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াল ভারত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ভিসার মেয়াদ আরো এক বছর বৃদ্ধি করেছে ভারত। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার এই ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে বলে রোববার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

২০০৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ভারতে বসবাসের মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়ে আসছেন সুইডেনের নাগরিকত্ব পাওয়া তসলিমা। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, আগামী ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত তসলিমা নাসরিনের জন্য ভারতে বসবাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে ৫৬ বছর বয়সী এই লেখিকাকে তিন মাসের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উল্লেখ করে ভিসার মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

টুইটে তিনি লেখেন, ‘সম্মানিত অমিত শাহ জি, আমার বসবাসের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কিন্তু আমি বিস্মিত হয়েছি, মাত্র তিন মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আমি পাঁচ বছরের জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু আমাকে মাত্র এক বছরের জন্য দেয়া হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জি, ৫০ বছরের জন্য ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হবে বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। ভারতই আমার একমাত্র বাড়ি। আমি নিশ্চিত, আপনি আমাকে উদ্ধার করবেন।’

গত ১৭ জুলাই দেয়া টুইটে তসলিমা লেখেন, ‘প্রত্যেকবার আমি ভিসার মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানোর জন্য আবেদন করি। কিন্তু প্রতিবারই এক বছরের জন্য দেয়া হয়। এবারও আমি পাঁচ বছর বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছিলাম, পেয়েছি মাত্র তিন মাসের।’

‘আশা করছি, সম্মানিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার ভিসার মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করবেন। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ। আমার টুইটার বন্ধুদের জন্য ভালোবাসা।’

ইসলামবিরোধী লেখালেখি ও মন্তব্যের কারণে ক্রমাগত খুনের হুমকির মুখে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছাড়েন তসলিমা নাসরিন। তখন থেকেই তিনি নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। গত দুই দশকের বিভিন্ন সময়ে তিনি ইউরোপ এবং আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বসবাস করেছেন। এর মাঝেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসের আগ্রহ প্রকাশ করেন; বিশেষ করে কলকাতায়।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তসলিমা নাসরিন ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসেরও আবেদন করেছেন। তবে সেব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ২০০৭ সালে কলকাতায় মুসলিমরা তসলিমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সহিংসতা শুরু করলে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।

এসএইচ-১৮/২১/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)