অভিবাসীদের সমান সুযোগ দিতে চান বরিস জনসন

ব্রিটেনের অভিবাসন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর অঙ্গীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ হিসেবে এতদিন ব্রিটেনকে ইইউ নাগরিকদের এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হয়েছিল।

ক্ষমতায় ফিরে ব্রেক্সিট কার্যকর করে জনসন বিশ্বের সব দেশের নাগরিকদের জন্য ব্রিটেনে অভিবাসনের সমান সুযোগ করে দিতে চান। সে ক্ষেত্রে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে যেসব বিদেশি ব্রিটেনে বসবাস করার অনুমতি পাবেন, সামাজিক ভাতা ও স্বাস্থ্য পরিসেবার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ নাগরিকদের মতো ছাড় পেতে তাদের পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

আগামী ১২ ডিসেম্বর আগাম নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বেশ জমে উঠেছে। জনমত জরিপে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের টোরি দল প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার দলের তুলনায় ১০ থেকে ১৭ শতাংশ এগিয়ে রয়েছে। চলতি সপ্তাহেই দুই দল আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ইশতাহার প্রকাশ করতে চলেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জনসন ও লেবার নেতা জেরেমি কর্বিন প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে পরস্পরের মুখোমুখি হবেন।

এবারের নির্বাচনের মূল বিষয় অবশ্যই ব্রেক্সিট। সানডে টেলিগ্রাফ সংবাদপত্রের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বরিস জনসন ক্ষমতায় ফিরলে অবিলম্বে ব্রেক্সিট কার্যকর করার পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। প্রথমত সংসদে অচলাবস্থা এড়াতে তিনি এমন সব প্রার্থী মনোনয়ন করেছেন, যারা তার ব্রেক্সিট চুক্তির প্রতি সমর্থন জানাতে প্রস্তুত।

প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতায় ফিরে জনসন সময় নষ্ট না করে ২৩শে ডিসেম্বর সংসদে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত বিতর্কের পরিকল্পনা করেছেন। সে ক্ষেত্রে আর কোনো বিলম্ব না করে ৩১শে জানুয়ারির নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করবে।

অন্যদিকে লেবার নেতা কর্বিন তার দলের পরিকল্পনা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট করেননি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, লেবার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হলে কোনো অবস্থায় জোট সরকার গঠন করবে না। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোটের শর্তে জাতীয়তাবাদী এসএনপি দলের সঙ্গেও বোঝাপড়া করবে না তার দল। ব্রেক্সিট সংক্রান্ত নীতি দলের নির্বাচনি ইশতাহারে স্পষ্ট করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন কর্বিন।

জনমত সমীক্ষায় দল এগিয়ে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী জনসন একটি বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন। ব্রিটিশ রাজনীতিতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ না করায় তিনি বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। ফলে আগামী মাসের নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়েও দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে। ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত গণভোটের ক্ষেত্রে রাশিয়া সত্যি হস্তক্ষেপ করে থাকলে সাধারণ নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা দেখা দেয়ার আশঙ্কা দূর হচ্ছে না।

এ বিষয় সংশয় দূর করতে বিরোধী লেবার দল জনসনের উপর চাপ সৃষ্টি করছে৷ রাশিয়া টোরি দলকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চাঁদা দিচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে। নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ব্র্যান্ডন লুইস অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তার মতে, দলের চাঁদার সব হিসেব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছে। একমাত্র ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছ থেকে টোরি দল চাঁদা গ্রহণ করে বলে দাবি করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, জনসন নির্বাচনের পর সেই রিপোর্ট প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন।

এসএইচ-২৭/১৮/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)