জার্মান বন্ধ করছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭৯ সালে এবং ইউক্রেনে ১৯৮৬ সালে পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর পারমাণবিক শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি হয়। ২০১১ সালে জাপানে ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পর জার্মানি ঘোষণা দিয়েছিল তারা ২০২২ সালের মধ্যেই চালু থাকা সব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেবে। সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে দেশটি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বর্তমানে জার্মানিতে যে সাতটি সচল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে সেগুলো আগামী তিন বছরের মধ্যে বন্ধ করা হবে। তবে পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো ধ্বংসের পর সেগুলোর উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয় (রেডিওঅ্যাক্টিভ) বর্জ্য কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে দেশটি।

জার্মানিকে ২০৩১ সালের মধ্যে প্রায় ২৮ হাজার কিউবিক মিটার প্রাণনাশক উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পুতে ফেলতে হবে। আর এটা নিয়েই মূলত বড় সমস্যায় পড়েছে দেশটি। উপযুক্ত ভাগাড়ের খোঁজ করে এসব রাসায়নিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য দেশটির সরকার একটি কমিটিও গঠন করেছে।

বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ওই কমিটি এখন উচ্চমাত্রার রেডিওঅ্যাক্টিভ বর্জ্যবাহী প্রায় ২ হাজার কন্টেইনার স্থায়ীভাবে পুঁতে রাখার জন্য একটা জায়গা খুঁজছে। তবে সমস্যা হলো সে জায়গাটি হতে হবে পাথরবেষ্টিত। আর সেখানে কখনোই ভূগর্ভস্থ পানি কিংবা ভূমিকম্প অথবা ভূমিধস কোনো ফুটো তৈরি করতে না পারে। হলেই সব শেষ।

কমিটির সদস্য জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখের পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির চেয়ারপারসন মিরান্ডা শ্রয়াস বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ধ্বংসের ফলে ২৮ হাজার কিউবিক মিটারের বেশি বর্জ্য সৃষ্টি হবে। মানবদেহের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর এই বিপুল বর্জ্য কোথায় নিরাপদে ব্যবস্থাপনা করা হবে, তা নিয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে জার্মানি।

উচ্চমাত্রার এসব তেজস্ক্রিয় বর্জ্য স্থায়ীভাবে পুঁতে রাখার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে জার্মানির অর্থনীতি ও জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে তারা এমন কোনো স্থান খুঁজে বের করতে বদ্ধ পরিকর, যেখানে এসব উচ্চমাত্রার বর্জ্য নিরাপদে পুঁতে রাখা সম্ভব হবে।

আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, উপযূক্ত স্থান যদিওবা শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু উচ্চ মাত্রার এসব রাসায়নিক বর্জ্য পরিবহন, কিংবা এটি কোনো কিছু দিয়ে ঢেকে রাখা অর্থাৎ মোড়কজাত করে বহন করা কিংবা কোনোভাবে এসবের কারও যুক্ততা তৈরি হলেও তা মানবজাতির জন্য হবে আরও এক মহাবিপর্যয়।

এসএইচ-১৭/০২/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)