রাজপরিবারের ভাঙনে আক্ষেপ উইলিয়ামের

মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মালেও, ছোট থেকে কম ঝড়ঝাপটা সইতে হয়নি তাদের। কিন্তু বিপদে-আপদে ছোট্ট ভাইটিকে দু’হাত দিয়ে আগলে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু এ বার আর ধরে রাখতে পারলেন না।

ব্রিটেনের রাজপরিবারের ভাঙন নিয়ে গোটা দুনিয়ায় যখন হইচই, তখন ঘনিষ্ঠ মহলে এমনই আক্ষেপ উগরে দিলেন প্রিন্স উইলিয়াম। ভাইয়ের সিদ্ধান্তে যে তিনি মর্মাহত, বন্ধুদের সামনে খোলাখুলি তা স্বীকারও করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমনটাই জানা গেল।

ব্রিটেনের ‘দ্য সানডে টাইমস’ পত্রিকা জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি বন্ধুদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি বলেন, ‘এতো দিন নিজে হাতে ভাইকে আগলে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয়। আমরা দু’জন দু’টি ভিন্ন ভিন্ন সত্তা। গোট ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই মুহূর্তে ওদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

আশাকরি, এমন একটা সময় আসবে, যখন আমরা সবাই ফের এক ছাতার নিচে জড়ো হব। আমি চাই, প্রত্যেকে একজোট হয়ে কাজ করুক।’

উইলিয়ামকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম যে মন্তব্য প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজপরিবারের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

প্রিন্স চার্লস এবং ‘পিপলস প্রিন্সেস’ প্রয়াত ডায়ানার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম এবং হ্যারি। দুই ভাই একই সঙ্গে বড় হয়েছেন। চার্লস এবং ডায়ানার বিবাহ বিচ্ছেদ এবং তার পরবর্তী কেলেঙ্কারি নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়া যখন উত্তাল, তখন থেকেই একে অপরকে সামলে এসেছেন তারা। ১৯৯৭ সালে পথ দুর্ঘটনায় ডায়ানার আকস্মিক মৃত্যুর পর সেই বন্ধন আরও গাঢ় হয়েছিল বলে একাধিক বার নিজেমুখেই সে কথা জানিয়েছেন উইলিয়াম এবং হ্যারি। এমনকি উইলিয়ামের জীবনে তার স্ত্রী ক্যাথরিন আসার পরেও তাতে ছেদ পড়েনি। বরং তিন জনে মিলে একাধিক সমাজসেবামূলক কাজে যোগ দেন।

যদিও হ্যারির জীবনে মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কলের প্রবেশের পরেই ছবিটা পাল্টাতে শুরু করে বলে দাবি রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ মহলের।

তাদের দাবি, আগে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দাদা এবং বৌদির সঙ্গে পরামর্শ করতেন হ্যারি। কিন্তু মেগান আসার পর তাদের মধ্যে ক্রমশ দূরত্ব তৈরি হয়। শোনা যায়, উইলিয়াম চেয়েছিলেন পেশায় অভিনেত্রী মেগানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে হ্যারি যেন বুঝে শুনে পা ফেলেন। কিন্তু সে কথা বোঝাতে গেলে দাদাকেই ভুল বুঝে বসেন হ্যারি। তাই ভাইকে আর ঘাঁটাননি উইলিয়াম। বরং মেগান ও হ্যারির বিয়েতে রাজি হয়ে যান তিনিও। সেই মতো ২০১৮-র ১৯ মে গাঁটছড়া বাঁধেন হ্যারি ও মেগান।

কিন্তু স্বাধীনচেতা মেগান শুরু থেকেই রাজপরিবারের আদব কায়দার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ সমালোচকদের।

সাসেক্সের ডিউক প্রিন্স হ্যারি ও ডাচেস মেগান মার্কেল রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে কানাডায় চলে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর ব্রিটিশ রাজপরিবার এক অভূতপূর্ব সংকটে পড়েছে। এদিকে, হ্যারি ও মেগানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠক বসছেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

রানী বা রাজপরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে আগাম আলোচনা ছাড়াই এমন ঘোষণা দেওয়ার পর তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ফলে ব্রিটিশ রাজপরিবার এক অভূতপূর্ব সংকটে পড়ে।

এসএইচ-২৪/১৩/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)