ওমরের জন্য কষ্ট পাচ্ছেন মমতা

চেহারায় সেই ঝকঝকে ভাবটা আর নেই। বরং চোখের কোণে বলিরেখাটা যেন আরও গভীর হয়েছে। বুক ছুঁইছুঁই কাঁচা পাকা দাড়ির মধ্যে হাসিটা টিকিয়ে রেখেছেন বটে, তবে দু’চোখে বিষণ্ণতার ছাপ স্পষ্ট। বন্দিদশা থেকে জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার এমন ছবিই এ বার সামনে এল।

উপত্যকা প্রশাসনের তরফে শনিবার ছবিটি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তাতে গাঢ় নীল রঙের জ্যাকেট এবং টুপি পরে বরফের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ওমরকে। গুঁড়ো গুঁড়ো বরফে দুই কাঁধ ঢেকে গিয়েছে তাঁর। বরফ পড়েছে মাথাতেও। সেই অবস্থাতেই ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তিনি।

ছবিটি সামনে আসতেই এ দিন তা নিয়ে টুইট করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য সামনে আসা ওমরের ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘এই ছবিতে ওমরকে চিনতেই পারিনি আমি। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে এমনটা হচ্ছে। এ সব কবে শেষ হবে?

’’শুধু মমতাই নন, ওমরের ছবিটি দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন বহু মানুষ। এ বছর মার্চে ৫০-এ পা দেবেন ওমর। কিন্তু ছবিতে তাঁকে অনেক বয়স্ক দেখতে লাগছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে। ছ’মাস নয় ওমরকে দেখে মনে হচ্ছে বন্দিদশায় ৩০ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি, এমন মন্তব্যও করেন কেউ কেউ। এর আগে, অক্টোবরে ওমর আবদুল্লার একটি ছবি সামনে এসেছিল। তবে তখন তাঁকে এতটা ক্লান্ত লাগেনি বলেও মন্ত্বব্য করেছেন অনেকে।

এ নিয়ে ন্যাশনাল কনফারেন্সের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও, ওমরের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দিদশা থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত দাড়ি কাটবেন না বলে পণ করেছেন ওমর।

কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করার সিদ্ধান্ত নিলে গত ৫ অগস্ট ওমর আবদুল্লাকে আটক করা হয়। তার পর ছ’মাস কাটতে চলল। এখনও শ্রীনগরের হরি নিবাসে বন্দি হয়ে রয়েছেন তিনি। উপত্যকার আর অন্য দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমরের বাবা ফারুখ আবদুল্লাও বন্দি রয়েছেন।

ফারুখ আবদুল্লাকে জন নিরাপত্তা আইনে বন্দি করা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন সমাজকর্মীরা। শুক্রবার মার্কিন সরকারের তরফেও একই আর্জি জানানো হয় ভারত সরকারকে।নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাশ্মীরে বন্দি রয়েছেন যে রাজনীতিকরা, তাদের ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়। তার পরই এ দিন ওমর আবদুল্লার ছবি প্রকাশ পেল।

এসএইচ-১৫/২৬/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)