মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান ইইউ’র

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। এদিকে, মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতের ওই আদেশ পুরোপুরি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

মিয়ানমারে নিযুক্ত ইউরোপীয় দূত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর বিশেষ দূত ও মিশনের প্রধান সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা আশা করব ন্যায়বিচারের স্বার্থে মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ পুরোপুরি মেনে চলবে।

গত ২৩ জানুয়ারি রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চারটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। আদালত সর্বসম্মতভাবে ওই আদেশ জারি করে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে গত বছরের নভেম্বরে মামলা করে গাম্বিয়া। গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গাম্বিয়ার পক্ষে মামলার শুনানিতে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি।

সেসময় শুনানিতে মামলাকারী গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যাতে আর কোনও ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ৫টি আদেশ চেয়েছিল।

আন্তর্জাতিক আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে, মিয়ানমার তাদের দেশের সেনাবাহিনীর দ্বারা রোহিঙ্গাদের ওপর যে কোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতিসাধন বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করবে।

একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর যে অপরাধ করা হয়েছে সেগুলোর প্রমাণ যেন ধ্বংস করা না হয় সেই নির্দেশও দিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।

সে সময় অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হয়। রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, নারীদের ধর্ষণ এবং নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে মিয়ানমার সেনারা। ওই দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই আদেশকে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৬-২০১৭ সালে ধারাবাহিকভাবে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সে বিষয়ে জবাবদিহিতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এসএইচ-১৮/২৯/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)