নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রথমবার ফোনালাপ হয়েছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের হবু প্রেসিডেন্টের কাছে টেলিফোন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এসময় দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশাপ্রকাশ করেন দুই নেতা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাতে নরেন্দ্র মোদি এক টুইটে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানাতে মাত্র ফোনে কথা বললাম। আমরা ইন্দো-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রাখার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছি এবং করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতার মতো অগ্রাধিকারমূলক বিষয়ে আলোচনা করেছি।
আরেকটি টুইটে তিনি বলেন, নবনির্বাচিত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের জন্যেও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছি। তার এই সাফল্য ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়, যারা ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের প্রবল শক্তির উৎস- তাদের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও অনুপ্রেরণার বিষয়।
এদিকে, মঙ্গলবার দুই নেতার ফোনালাপে দেশে-বিদেশে গণতান্ত্রিক শক্তি জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাইডেনের ট্রানজিশন টিমের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ এবং ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য সংকট প্রতিরোধের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চান। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি, বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, দেশে-বিদেশে গণতান্ত্রিক শক্তি বৃদ্ধি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও উন্নতি ধরে রাখার বিষয়েও কথা হয়েছে তাদের।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্তরঙ্গ বন্ধুতের খবর কারও অজানা নয়। গত ফেব্রুয়ারিতেও ভারত সফর করে গেছেন ট্রাম্প। সেসময় তার সম্মানে বিশাল আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ‘প্রিয়বন্ধু’ মোদি।
এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ভারত সফর করেছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহচর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার। সেসময় দুই দেশের মধ্যে স্যাটেলাইট ও সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও হয়।
তাছাড়া, ট্রাম্প বরাবরই মোদির কট্টর সমর্থক ছিলেন। ভারতে মুসলিম নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে কখনোই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি তিনি।
তবে এ বিষয়ে সরব ছিলেন জো বাইডেন। তার প্রচারণা ওয়েবসাইটে ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা পুনর্বহাল, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
এমনকি ভারতীয় বংশোদ্ভূত সদ্য-নির্বাচিত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও ভারতের হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদী সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এশিয়া অঞ্চলে চীনের প্রভাব ঠেকাতে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখবে বাইডেন প্রশাসনও। আর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদ পেতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দাবি করতে পারে ভারত।
এসএইচ-১৬/১৮/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)